হিজরি বর্ষপঞ্জী অনুসারে রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের পয়লা তারিখে ঈদুল ফিতর উৎসব পালন করা হয়। তবে এই পঞ্জিকা অনুসারে কোনও অবস্থাতে রমজান মাস ৩০ দিনের বেশি দীর্ঘ হবে না। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রমজানের সমাপ্তিতে শাওয়ালের প্রারম্ভ গণনা করা হয়। ঈদের আগের রাতটিকে ইসলামী পরিভাষায় লাইলাতুল জায়জা এবং চলতি ভাষায় "চাঁদ রাত" বলা হয়। শাওয়াল মাসের চাঁদ অর্থাৎ সূর্যাস্তে একফালি নতুন চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদ হয়, এই কথা থেকেই চাঁদ রাত কথাটির উদ্ভব। ঈদের চাঁদ স্বচক্ষে দেখে তবেই ঈদের ঘোষণা দেয়া ইসলামী বিধান।
আধুনিক কালে অনেক দেশে গাণিতিক হিসাবে ঈদের দিন নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশে ঈদের দিন নির্ধারিত হয় দেশের কোথাও না-কোথাও চাঁদ দর্শনের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে। দেশের কোনো স্থানে স্থানীয় ভাবে চাঁদ দেখা গেলে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে ঈদের দিন ঠিক করা হয়। মুসলমানদের জন্য ঈদের পূর্বে পুরো রমজান মাস রোজা রাখা হলেও ঈদের দিনে রোজা রাখা নিষিদ্ধ বা হারাম। ঈদের দিন ভোরে মুসলমানরা আল্লাহর ইবাদত করে থাকে। ইসলামিক বিধান অনুসারে ২ রাকাত ঈদের নামাজ ৬ তাকবিরের সঙ্গে ময়দান বা বড় মসজিদে পড়া হয়। ফযরের নামাযের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর ঈদুল ফিতরের নামাযের সময় হয়। এই নামায আদায় করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব।
ইমাম কর্তৃক শুক্রবারে জুম্মার নামাজের আগে ইসলামিক বক্তব্য প্রদানের বিধান থাকলেও ঈদের নামাজের ক্ষেত্রে তা নামাজের পরে প্রদান করার নিয়ম ইসলামে রয়েছে। ইসলামের বর্ণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে খুৎবা প্রদান ইমামের জন্য সুন্নত ; তা শ্রবণ করা নামাযীর জন্য ওয়াজিব। সাধারণত: ঈদের নামাজের পরে মুসলমানরা সমবেতভাবে মুনাজাত করে থাকে এবং একে অন্যেরসঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের সম্ভাষণ বিনিময় করে থাকে। ঈদের বিশেষ শুভেচ্ছাসূচক সম্ভাষণটি হলো, "ঈদ মুবারাক"। তবে এই বছরে লকডাউনের কারণে পুরও অনুষ্ঠানের রীতি বদল হয়েছে। সকলে এই খুশির উৎসব পালন করবেন বাড়িতে থেকেই।