বাংলাদেশে আক্রান্ত ,সংখ্যালঘু হিন্দুরা
ভাঙচুর করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিল চরমপন্থীর দল
উত্তেজনা ছড়িয়েছিল এক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে
হামলাকারীদের কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ
ফেসবুকে হজরত মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থনকরা পোস্টের গুজব নিয়ে উত্তেজনা। আর তার জেরেই বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় কার্যত তাণ্ডব চালালো চরমপন্থীরা। রবিবার রাতে সেখানকার বেশ কিছু হিন্দু পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর করে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
হজরত মহম্মদের ক্যারিকেচার ছবি নিয়ে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ-র মন্তব্যের পর থেকে বিভিন্ন মুসলিম দেশের মতো বাংলাদেশেও বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে। এরমধ্যেই ফ্রান্সে বসবাসরত এক বাংলাদেশী ম্যাক্রঁর পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিলে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সেই পোস্ট আবার সমর্থন করে মন্তব্য করেন পূর্বো ধুর এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ওই এলাকার আরও এক ব্যক্তি। কিন্তু তাঁরা মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থন জানিয়ে ওই পোস্ট করেছেন বলে রটে যায় এলকায়। সেই নিয়ে শনিবার থেকেই ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল।
রবিবার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে পুলিশ প্রধান শিক্ষক-সহ ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। অপর ব্যক্তি নিকটবর্তী আন্দিকোট গ্রামের বাসিন্দা। আটক প্রধান শিক্ষক ও অন্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল সুরক্ষা আইনের অধীনে বাংলাদেশী পুলিশ মামলা করে। আদালত তাদের জামিন প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে প্রেরণ করা হয়।
এরপর রবিবার রাতে আচমকাই ওই দুই ব্যক্তির বাড়িতে হামলা করে চরমপন্থী মুসলমানরা। ওই দুই ব্যক্তির বাড়ি-সহ কুমিল্লার কুরবানপুর ও আন্দিকোট গ্রামের বেশ কয়েকটি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে দেদার ভাঙচুর, লুঠপাট চালানো হয় ও শেষে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে এখনও অবধি এই হামলাকারীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ এমনকী একটি মামলাও দায়ের করা হয়নি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, উপদ্রুত এলাকাগুলির পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। হামলাকারীদের সনাক্ত করতে পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে।