রাজ্যের সরকার বিরোধী সেলিব্রিটি হিসেবে পরিচিত শ্রীলেখা মিত্র থেকে শুরু করে জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এমনকি ইন্দ্রাশিস আচার্য সকলেই সরব হয়েছেন। তবে নন্দন কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে বৈষম্যের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে। বলেছে ৬ মে থেকে নন্দন খুলেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের তীব্র সমালোচক হিসেবে পরিচিত পরিচালক অনীক দত্ত। এর আগে একাধিকবার তাঁকে সরকারের কোপে পড়তে হয়েছে। এবারই সেই একই ঘটনা ঘটবে- সেই প্রশ্নও তুলে দিয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের সরকার বিরোধী পক্ষ। কারণ অনীক দত্তের ছবি 'অপরাজিত' ছবিতে দেখান হচ্ছে না নন্দনে। সত্যজিৎ রায়ের বায়োপিক বলা যেতে পারে এই ছবিটিকে। আর নন্দনের নামকরণও করেছিলেন তিনি। তাই সত্যজিৎ রায়ের অনুগামীদের আশা ছিল অনীক দত্তের আগের ছবি 'ভবিষ্যতের ভূত'-র মত সরকারের কোপে পড়বে না 'অপরাজিত'। কিন্তু ছবিটি রিজিল হওয়ার পরেই নন্দনের সিনেমার তালিকায় নেই সেটি।
আর এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। রাজ্যের সরকার বিরোধী সেলিব্রিটি হিসেবে পরিচিত শ্রীলেখা মিত্র থেকে শুরু করে জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এমনকি ইন্দ্রাশিস আচার্য সকলেই সরব হয়েছেন। তবে নন্দন কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে বৈষম্যের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে। বলেছে ৬ মে থেকে নন্দন খুলেছে। এখন সেখানে একই সঙ্গে চারটি ছবি চলছে। আরও ২০টি ছবি অপেক্ষায় রয়েছে। যে ছবিগুলি প্রদর্শিত হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে দেবের কিশমিশ, মিমির মিনি আর পরমব্রতর অভিযান। এরমধ্যে প্রথম দুই জন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। শাসকদলের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত পরমব্রত।
আগেরবার যখন 'ভবিষ্যতের ভূত' দেখান হয়নি নন্দনে তখন সরব হয়েছিলেন সায়নী ঘোষ। 'ভবিষ্যতের ভূত'-র মত এবারও
'অপরাজিত' ছবিতেও রয়েছেন সায়নী। কিন্তু সেই সময় তিনি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন না। বর্তমানে তিনি যুব তৃণমূলের নেত্রী। দলের হয়ে একাধিক অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যুব তৃণমূলের প্রথম সারির নেত্রীদের মধ্যেও রয়েছেন তিনি। তাই শ্রীলাখেরা সরকারকে আক্রমণের পাশাপাশি সায়নীকেও আক্রমণ করেছিলেন। তাঁদের প্রশ্ন ছিল এবারও অনীকের পাশে থাকবেন অভিনেত্রী। তার উত্তরে সায়নী জানিয়েছেন ছবিটা অনীক দত্তের - এমনটা তিনি দেখছেন না। ছবিটা সত্যজিৎ রায়ের জীবনী হিসেবেই দেখছেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যেই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। আর সেই ছবি নন্দনে জায়গা পেল না- এটাই তাঁকে সবথেকে বেশি আঘাত করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অনীক দত্তের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন নন্দন কর্তৃপক্ষের আচরণে তিনি কষ্ট পেয়েছেন। তবে অনীক দত্তের সরকার বিরোধিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন বিষয়টি অনীক দত্ত বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা সিপিএম বনাম তৃণমূল এভাবে দেখা ঠিক নয়। কারণ যদি তাই হত তাহলে অনীক দত্তের ছবিতে তিনি থাকার পরেও সেটি কেন নন্দনে জায়গা পেল না। তাঁর যুক্তি প্রত্যেক সপ্তাহে একগুচ্ছ বাংলা ছবি মুক্তি পাচ্ছে। সেই কারণেই অনীক দত্তের 'অপরাজিত' ছবিটি নন্দনে স্থান পায়নি। তবে তিনি আশা করছেন, ছবিটি যদি চলে তাহলে অবশ্যই 'অপরাজিত' নন্দনে দেখান হবে।