সত্যজিৎ আজও এক মহীরূহ, বলছে টলিউড

সত্যজিৎ রায়-এর জন্মদিন উপলক্ষে কী বললেন বাংলার কলাকূশলীরা। কতটা প্রভাবিত অভিনেতা পরিচালকের জীবন সত্যজীৎ রায়-এর সৃষ্টিতে।

এক হাতে ক্যামেরা তো অপর হাতে কলম, কলমে কখনও রহস্য কখনও বা প্রচ্ছদ, এভাবেই নিজের প্রতীভার শাখা-প্রশাখায় যিনি  সাংস্কৃতিক জগতকে সমৃদ্ধ করেছেন, তিনিই সত্যজিৎ রায়। যাকে প্রতিটি মানুষ চিনেছেন বিভিন্ন আঙ্গীকে। শৈশবে কেউ পেয়েছেন ফেলুদাকে, আবার কারুর সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে গুপি বাঘা-র মধ্যে দিয়ে। সে তালিকা থেকে বাদ পরেননি টলিউড তারকারাও। সত্যজিৎ রায়-এর জন্মদিন উপলক্ষে শেয়ার করলেন তাদের চোখে সত্যজিৎ রায়, জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে কতটা জড়িয়ে রয়েছেন তিনি।

সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছিল মার একবারই। দেখা হওয়া, গল্প করা হলেও মানুষ হিসেবে তাঁকে ছুঁতে পারা সম্ভব হয়নি, কারণ তখন মনের মধ্যে ঘুরছে একটাই অনুভূতি কার সঙ্গে বসে কথা বলছি। সেই মুহূর্তটা একটা বিশাল ব্যাপার। আর যদি আমরা সিনেমার দিক থেকে ভাবি, বলতে গেলে লেখক পরিচালক কম্বিনেশনটাই ভিষণ ভালো। আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যখন একজন লেখক কলম ধরেন, তখন তিনি সেই দৃশ্যগুলো কল্পনা করতে পারেন সবার আগে। আর সেটাকেই ক্যামেরার ভাষায় ফুঁটিয়ে তোলার মাধূর্যতাই আলাদা। তাই আমায় লেখক-পরিচালক কম্বিনেশনের সত্যজিৎ রায় সর্বাধিক প্রভাবিত করে।

Latest Videos

আমার কাছে সত্যজিৎ রায় সকল দিক থেকেই সমান প্রভাবশালী। তবে আমি যেহেতু ছবির জগতের মানুষ, তাই পরিচালক সত্যজিৎ রায়-কেই এগিয়ে রাখব। লেখক সত্যজিৎ রায়, পরিচালক সত্যজিৎ রায় এবং মাথায় রাখতে হবে অবশ্যই ডিজাইনার সত্যজিৎ রায়, নিজ নিজ ভূমিকায় অনবদ্ধ তিনি। আমি তার সকল কাজেই ঋদ্ধ, এক কথায় অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি ওনাকে।

সত্যজিৎ রায় বাঙালীর জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, আমরা বলব না গোটা ভারতের চলচ্চিত্র জগতে যারাই এসেছেন, তাদের মধ্যে সব থেকে আগে যে নামটা আমাদের স্মৃতিতে আসে সেটা হল সত্যজিৎ রায়। আমার ওনার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়নি ঠিকই তবে শৈশবে জ্ঞান হওয়া পর থেকেই অনেক গল্প অনেক লেখা পড়েছি ওনার। ফেলুদা তো পড়ে বড় হয়েছি। সত্যি বলতে ছোটবেলা থেকে বড় বেলায়, সত্যজিৎ রায়ের লেখা গল্প আমি একটাও বাদ রাখিনি। আমাদের বাঙালীদের ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠায় কোথাও যেন এই মানুষটা জড়িয়ে। আর তারপর তো সিনেমা আছেই। উনি যখন যেটা করেছেন, তার ভাষাটা আলাদা রকম করে বুঝিয়েছেন। আর আমাদের মতন যারা এই জগতে এসছেন, তাদের সবার কাছে কোথাও না কোথাও একটা উৎসাহের উৎস সত্যজিৎ রায়। কেননা এই মানুষটা সিনেমার এক অন্য ভাষাকে তুলে ধরেছিলেন। যখন প্রচ্ছদ এঁকেছেন, তখনও সেটা দারুন, আমার অফিসের দেওয়ালে সন্দেশ-এর প্রচ্ছদগুলি রাখা আছে। কারণ এগুলো আমাদের শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আমরা এগুলোর বাইরে নই। আমি চেষ্টা করি যে স্মৃতিকে জড়িয়ে বড় হয়েছি, তাকে যতটা পারি আগলে রাখার। যেমন নায়ক-এর ছবিগুলোও রাখা আছে। এগুলো দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। এগুলো দেখে আমি কিছু না কিছু শিখেছি। উনি অবশ্যই আমাদের কাছে এক ইনস্টিটিউট।

সত্যজিৎ রায়ের সবদিকই সমান প্রভাবশালী। উনিতো একজন প্রতিষ্ঠানের মতো, আমার মনে হয় মহীরূহ, ওনাকে জানা, ওনাকে চেনা, ওনার কাজের মধ্যে থেকে ওনাকে খুঁজে পাওয়া, তাতে বোধহয় সারা জীবন কেটে যাবে। সত্যজিৎ রায়ের মিউজিক, ক্যালিগ্রাফি, ওনার ছবি, যখন উনি একফনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সত্যজিৎ রায়ের চিত্রনাট্য ধারাবাহিকভাবে বেড়ত, যখন সন্দেশ পত্রিকার প্রচ্ছদ করেছেন, আমার মনে হয় প্রতিটি ধাপেই উনি ছিলেন সেরা।

লেখক সত্যজিৎ রায় বা পরিচালক সত্যজিৎ রায় নয়, দুজনেরই আমাদের সংস্কৃতিতে বিশাল অবদান, দুজনেই এ সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এখানে কোনও ভাগাভাগী নয়, সত্যজিৎ রায় এককথায় এক বিশাল ইনস্টিটিউশন।

আমি ওনাকে কুর্নিশ জানাতে চাই। সব দিক থেকেই উনি গ্রেট। চলচ্চিত্রই হোক বা গল্প বলা, প্রচ্ছদ অঙ্কনই হোক বা ছবির শর্ট ডিভিশন, প্রতিটি ধাপেই তিনি নিজের ছাপ রেখে গেছেন, যা আজও আমাদের মুগ্ধ করে।

Share this article
click me!

Latest Videos

দেরিতে আসায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে কড়া ধমক MLA অসিত মজুমদারের, দেখুন ভিডিও
Mamata Banerjee: 'মোদী কিছু দেয় নি আমি ৫০ লক্ষ বাড়ি দিয়েছি' বিতর্কিত মন্তব্য মমতার
নার্স হেনস্থার ঘটনায় বড় পদক্ষেপ! হাসপাতাল চত্বরে কড়া সিসিটিভি নজরদারি | Birbhum News Today
টাকা 'হজম' করার আগেই ধরে ফেলে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী | Suvendu Adhikari | Awas Yojana
এটিএম থেকে ফিরতেই চক্ষু চড়কগাছ! লক্ষাধিক টাকা নিমিষের মধ্যে হাওয়া, তোলপাড় শান্তিপুর | Nadia News