লতা মঙ্গেশকরের কাছে কাজ ছিল পুজোর মতো। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। তারপর দীর্ঘ ৭ দশক ধরে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন।
লতা দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার তুলে দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে। মুম্বইয়ে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তথা লতা মঙ্গেশকরের বোন আশা ভোঁসলে-সহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাত থেকে এই সম্মান গ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদী। এই বছর থেকে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে। এবার থেকে প্রতি বছর গীতিকার লতা মঙ্গেশকরকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে পুরস্কারটি দেওয়া হবে। এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দিদির স্মৃতিচারণা করেন আশা। কাজের প্রতি লতার যে ভালোবাসা ছিল তা জানিয়েছেন তিনি।
লতা মঙ্গেশকরের কাছে কাজ ছিল পুজোর মতো। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। তারপর দীর্ঘ ৭ দশক ধরে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বেশ অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। প্রায় সব অঙ্গই বিকল হয়ে গিয়েছিল। বহু চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, শেষরক্ষা আর হয়নি। প্রিয়জনদের ফেলে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি।
আরও পড়ুন- 'বহু বছর পর রাখিতে লতা দিদি থাকবেন না', লতা দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার পেয়ে আবেগঘন মোদী
মুম্বইয়ের ওই অনুষ্ঠানে লতার স্মৃতিচারণা করেন বোন আশা। কাজের প্রতি লতার যে ভালোবাসা ছিল তা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। বলেন, "খুব ছোট বয়সেই ক্যারিয়ার শুরু করেছিল। একবার দিদির ১০৪ জ্বর এসেছিল। মা বলেছিল 'আজ শুটিংয়ে যাস না শরীর ভালো নয়'। কিন্তু, দিদি বলেছিল 'না মা আমাকে যেতেই হবে'। আর সেই ধুম জ্বর নিয়েই গিয়েছিল আর কাজ করেছিল। একজন শিল্পীকে কতটা কষ্ট করতে হয়েছিল, আর দিদি তা করেছিল।" দিদির স্মৃতিচারণার পাশাপাশি এভারগ্রিন গান 'আয়েগা আনেওয়ালা' গাইতেও দেখা যায় আশা ভোঁসলেকে।
প্রথম লতা দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে। মোদীর সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের সম্পর্ক ছিল খুবই ভালো। তাঁকে 'দিদি' বলেই সম্বোধন করতেন মোদী। আর এই সম্মান হাতে পাওয়ার পর রীতিমতো আবেগঘন হয়ে পড়েন তিনি। বলেন, "সঙ্গীত মাতৃত্ব আর ভালবাসার অনুভূতি দেয়। সঙ্গীত নিয়ে যেতে পারে দেশাত্মবোধ আর কর্তব্যের দিকে। আমরা সবাই ভাগ্যবান যে আমরা সঙ্গীদের ক্ষমতা দেখেছি, আর তা দেখেছি লতা দিদির রূপে। সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে আমি মনে করি সঙ্গীত হল সাধনা। লতা দিদি আমার কাছে বড় দিদির মতো ছিলেন। আমি সব সময় তাঁর কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। বহু যুগ পর প্রথমবার আসন্ন রাখি উৎসবে লতা দিদি থাকবেন না।"