রাজ কুন্দ্রা পর্ন মামলা - ক্যামেরার সামনে ধর্ষণ করা হয়েছিল, ভয়াবহ বিবরণ দিলেন ভুক্তভোগী মডেল

জোর খাটিয়ে, ভয় দেখিয়ে, মনকী ধর্ষণ করে তৈরি করা হত অশ্লীল চিত্র। রাজ কুন্দ্রা মামলায় কীভাবে ফাদে ফেলা হত মডেল-অভিনেত্রীদের, ভুক্তভোগীরা দিলেন ভয়াবহ বিবরণ।

Asianet News Bangla | Published : Jul 28, 2021 2:15 PM IST / Updated: Jul 28 2021, 09:11 PM IST

অশ্লীল ছবি তৈরির চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রা গ্রেফতার হওয়ার পড় থেকেই এই চক্রের শিকার হওয়া মডেল-অভিনেত্রীরা একে একে এগিয়ে এসে মুখ খুলছেন এই মামলার বিষয়ে। আর তাদের বয়ান থেকে জানা যাচ্ছে ই পর্ন চক্র সম্পর্কে ভয়াবহ সব তথ্য। একযোগে তারা জানিয়েছেন, তাদের উপর জোর খাটিয়ে, ভয় দেখিয়ে অশ্লীল চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে বাধ্য করা হত। এমনকী, ধর্ষণ করে, সেই দৃশ্যও ক্যামেরা বন্দি করে লাগানো হত পর্ন ব্যবসার কাজে। সেই ধর্ষণ দৃশ্যের ভিডিও রাজ কুন্দ্রার কাছে তো বিক্রি করা হতোই, আবার ওই একই সামগ্রী অন্য প্রাপ্তবয়স্ক অ্যাপ-মালিকদের কাছেও বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ।

কীভাবে উঠতি মডেল-অভিনেত্রীদের পর্ন ব্যবসার ফাদে ফেলা হত? ই পর্নচক্রের শিকার হওয়া এক মহিলা বলেছেন, প্রথমে ইনস্টাগ্রামে একটি নিরীহ অডিশনের বিজ্ঞাপন দেোয়া হয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপন দেখেই তিনি অডিশন দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে প্রথমে কিছু সাধারণ পোজ দিতে বলা হয়েছিল। তারপর একটু একটু করে সেই অডিশনের প্রতিটি পর্যায়ে শট দেওয়ার বাড়ানো হয় অশ্লীলতার মাত্রা। এক সময়ের পর তিনি ওই দৃশ্য করতে আপত্তি জানালে, পর্ন চক্রের সদস্যরা তাকে মামলা করার হুমকি দিয়েছিল। তাকে বলা হয়েছিল, ওই অবস্থায় তিনি যদি চলে যান, তাহলে পুরো শ্যুটিংয়ের খরচই তাকে বহন করতে হবে। আর্থিক চাপে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন ক্যামেরার সামনে অশ্লীলতম দৃশ্য করতে। 

আগেই জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে কোভিড মহামারি ঠেকাতে লকডাউন জারি করার পর আরোই ফুলে ফেপে উঠেছিল রাজ কুন্দ্রার ই অশ্লীল ছবির ব্যবসা। লকডাউনে েকদিকে যেমন তার অ্যাপের গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছিল, তেমনই লকডাউনের কারণে আর্থিকভাবে চাপে পড়া মডেল-অভিনেত্রীদের অসহায়তার সুযোগ নিতেও কসুর করেননি রাজ ও তার সহযোগীরা।এরকমই এক মডেল জানিয়েছেন, লকডাউনে আর্থিক অবস্থা দারুণ খারাপ হওয়ায় তার কাজের খুব প্রয়োজন ছিল। আর তাই তিনি রাজ কুন্দ্রার অডিশনে গিয়েছিলেন। প্রথমে তাকে যে চিত্রনাট্যটি দেওয়া হয়েছিল, তা দেখে সন্দেহ করার কোনও অবকাশ ছিল না। চিত্রনাট্য অনুযায়ী তাকে এক রানির ভূমিকায় অভিনয় করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, শট দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ওটা কোনও সাধারণ ওয়েব সিরিজের অডিশনের সেট আপ ছিল না।

আরও পড়ুন - অনলাইন বেটিং-এও কি জড়িত রাজ - বাড়ল হেফাজত, পুলিশ খুঁজছে আন্তর্জাতিক চক্র

আরও পড়ুন - মুখোমুখি জেরা, পুলিশের সঙ্গে রাজকে দেখা মাত্রই চিৎকার করে কী বললেন শিল্পা

আরও পড়ুন - স্বামী রাজের'পর্নোগ্রাফি' কান্ডে এখনই ক্লিনচিট নয় শিল্পাকে, কড়া নজরদাড়িতে রয়েছেন অভিনেত্রী

সেই ধোকাবাজি ধরা পড়ে যাওয়ার পরই তিনি ওই দৃশ্য করার থেকে পিছিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আগের ভুক্তভোগীর মতোই তাকেও একই ধরণের মামলার হুমকি, শুটিং-ের ব্যয়ভার বহনের হুমকি দেোয়া হয়েছিল। তাতে একেবারে ভেঙে পড়েছিেলন ওই মডেল। তিনি কাঁদতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু, তাতে পর্ন মাফিয়াদের মন তো গলেইনি, উপরন্ত মেকআপ ম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, মুখে আরও মেক-আপ চড়িয়ে চোখের জলের দাগগুলি ছেকে তাকে ওই দৃশ্যের জন্য তৈরি করে দিতে। এরপর এক পুরুষ অভিনেতা তাকে ধর্ষণ করে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। আর সেই ধর্ষণদৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করেছিল উপস্থিত অন্যান্যরা। শ্যুটিংয়ের গোটা সময়টা তার চোখ দিয়ে অঝোরে জল ঝরেছে, আর পর্ন ব্যবসায়ীরা বারবার মেকআপ দিয়ে সেই জলের ধারার দাগ ঢেকে দিয়েছেন। শ্যুটিং শেষে তার হাতে ১০,০০০ টাকারও কম অর্থ দিয়ে বিদায় করা হয়েছিল। 

Share this article
click me!