
চলতি সপ্তাহে, ইংল্যান্ডের (England) গ্লস্টারশায়ারের (Gloucestershire) এক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক অদ্ভূত সমস্যা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ব্যক্তির পায়ুছিদ্রে (Rectum) একটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (World War II) সময়কার একটি আর্টিলারি শেল, অর্থাৎ গোলা আটকে গিয়েছিল। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, যে সেই গোলাটির বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, এই আশঙ্কায় চিকিৎসকরা পুলিশ, এমনকী সামরিক বাহিনীকে পর্যন্ত খবর দিতে বাধ্য হন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিপদ কিছু ঘটেনি। আর, ওই হতভাগ্য ব্যক্তির পায়ুছিদ্রও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অস্ত্রমুক্ত হয়েছে। তবে, এই কাহিনি সাড়া ফেলে দিয়েছে, নেট দুনিয়ায়।
এই চূড়ান্ত অস্বস্তিকর অবস্থায় তিনি পড়লেন কীকরে? ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার। গ্লস্টারশায়ার রয়্যাল হাসপাতালের (Gloucestershire Royal Hospital) এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে, 'দ্য সান'এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওইদিন সকালে নিজের সামরিক অস্ত্রশস্ত্রের সম্ভার পরিষ্কার করছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই সময়েই একটি 'আর্মার-পিয়ার্সিং প্রজেক্টাইল' (Armour-piercing projectile) গোলা খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, তিনি গোলাটি মেঝেতে রেখেছিলেন। তারপর তিনি এক অসতর্ক মুহূর্তে পা পিছলে ঠিক গোলাটির উপরেই পড়ে যান। আর সেটি তাঁর মোক্ষম জায়গায় ঢুকে যায়। হাসপাতালের ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, হাসপাতালে যখন এসেছিলেন ওই ব্যক্তি, প্রচন্ড ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন।
এদিকে তিনি হাসপাতালে আসার পর, ডাক্তাররা বেশ ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন। গোটা পৃথিবীতেই যেখানে যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লড়াই হয়েছিল, সেইসব জায়গায়, সেই সময়ের না ফাটা গোলা, বোমা ইত্যাদি পাওয়া যায়। অনেক সময়ই সেগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটে বিপদও নেমে আসে। চিকিৎসকরা এই ক্ষেত্রেও সেইরকম আশঙ্কা করেছিলেন। তাই, ঝুঁকি না নিয়ে তারা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন।
স্থানীয় পুলিশ বিভাগও জানিয়েছে, বুধবার সকালে (১ ডিসেম্বর) তাদের কাছে ফোন আসার পর তারা গ্লস্টারশায়ার রয়্যাল হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিল। তবে, পুলিশ সেখানে পৌঁছনোর আগেই ওই ব্যক্তিকে যন্ত্রনামুক্ত করেছিলেন ডাক্তাররা। গোলাটি বের করে একটি নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছিল। স্থানীয় পুলিশের পক্ষে সেই যুদ্ধাস্ত্রের বিপদ বিচার করা সম্ভব হয়নি। তারা সেনা বাহিনীর কাছে সহায়তা চায়। সেই অনুরোধে সেনার একটি বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড (Bomb Disposal Squad) ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। তারা পরীক্ষা করে নিশ্চিত করে যে সেটি 'লাইভ' নয়। অর্থাৎ তাতে বিস্ফোরক নেই। তাই, সেটি থেকে জনসাধারণের কোনও বিপদ ঘটার সম্ভাবনা নেই। তাতে হাফ ছেড়ে বাঁচেন চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মীরা।
ওই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, গোলাটি ছিল একটি ১৭ সেমি বাই ৬ সেন্টিমিটার আর্মার-পিয়ার্সিং প্রজেক্টাইল শেল। তবে, পরে ব্রিটিশ রয়্যাল আর্মি জানিয়েছে, গোলাটি ছিল ৫৭ মিলিমিটারের গোলা। যে কোনও ট্যাঙ্কের বর্মটি ছিঁড়ে ফেলার জন্য এই গোলার নকশা করা হয়েছিল। তবে, যে গোলাটি ওই ব্যক্তির পায়ুছিদ্রে ঢুকে গিয়েছিল, তাতে কোনও বারুদ ছিল না। ফলে, ,সেটি সীসার সূক্ষ্ম নিষ্ক্রিয় পিণ্ড ছাড়া কিছু নয়। তাই ওই ব্যরক্তির প্রাণহানির কোনও ঝুঁকি ছিল না, তবে তাঁর যন্ত্রনা, অন্তত অন্য কারোর পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।