দীপিকা সরকার, দুর্গাপুর: করোনার আতঙ্কে মাস্কে মুখ ঢেকে ফেলেছেন সকলেই। পথে-ঘাটে, বাজারে কিংবা কর্মস্থলে, পরিচিত মানুষকে আর চট করে চেনা যাচ্ছে না! ফলে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি এমনই যে, কেউ নিজের ছবি ছাপানো মাস্ক ব্যবহার করছেন, তো কারও মাস্কে আবার লেখা নাম, এমনকী, পদবিও! অভিনব এই মাস্কের চাহিদা তুঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার সর্বত্রই।
আরও পড়ুন: ফের করোনার থাবা নলহাটি পুরসভায়, এবার আক্রান্ত খোদ ভাইস চেয়ারম্যান
মাস ছয়েক আগেও জীবনটা অন্যরকম ছিল। মাস্ক ছাড়াই দিব্য়ি ঘুরে বেড়াতেন সকলেই। সকালে বাদুড়ঝোলা হয়ে বাসে কিংবা ট্রেনে অফিস যাওয়া আর বাড়ি ফিরে সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে কিংবা পাড়ার মোড়ে আড্ডা। এটাই ছিল চাকুরিজীবী মধ্যবিত্ত বাঙালির রোজনামচা। কোথায় থেকে কী হয়ে হয়ে গেল! করোনা সতর্কতায় লকডাউন চলেছে প্রায় মাস তিনেক। তারপর ফের খুলল সরকারি ও বেসরকারি অফিস, রাস্তায় নামল যানবাহনও। আর তাতেই ঘটল বিপত্তি। আনলক পর্বে রাজ্যের সর্বত্র সংক্রমণ ছড়িয়েছে আরও। করোনা মোকাবিলায় এখন সাপ্তাহে দু'দিন করে পুরোদস্তুর লকডাউন চলছে রাজ্যে। বাকি দিনগুলিতেও একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনোর উপায় নেই। দৈনন্দিন পোশাকের অঙ্গ হয়ে উঠেছে মাস্ক। আর কতদিন যে এভাবে চলবে, তা জানা নেই কারওই। এদিকে মাস্কের কারণে চেনা মানুষ হয়ে উঠেছে অচেনা।
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভূমিপুজো, বীরভূমে সতীপীঠে যজ্ঞ করে 'হুমকি'র মুখে বিজেপি নেতা
দুর্গাপুরের শহরে ফরিদপুর এলাকায় থাকেন বাপি সামন্ত। গৃহশিক্ষকতার সুবাদে এলাকায় পরিচিতি আছে তাঁর। কিন্তু এখন তাঁকে পথেঘাটে দেখলে কেউ চিনতে পারেননি। কেন? বাপি জানালেন, 'আগামীদিনেও হয়তো মাস্ক ব্যবহারের প্রচলন থাকবে। কিন্তু মাস্ক পরার জন্য পরিচিত মানুষেরা দেখেও চিনতে পারেন না। আমিও তাঁদের চিনতে পারি না।' স্রেফ তিনি একা নন, এমন সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। বিপাড়ে পড়তে হচ্ছে কর্মস্থলেও। তাহলে উপায়? শিল্পাঞ্চল-সহ গোটা পশ্চিম বর্ধমান জেলা জুড়ে চাহিদা বেড়েছে ব্যবহারকারীর ছবি ছাপানো মাস্ক বা হিট প্রেসার প্রিন্ট মাস্কের। স্থানীয় ব্যবসায়ী সাহেব চক্রবর্তী বলেন, 'আগে জামা-কাপড়, চিনামাটি কাপ-সহ বিভিন্ন সামগ্রীর উপর লেখা বা ছবি ছাপানো হত। এখন লেখা বা ছবি প্রিন্ট করা হচ্ছে মাস্কেও। সেই মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।'