সোমবার দ্য ইনস্টিটিউট অফ কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত সিএফও লিডারশিপ সামিট ২.০ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন অমিত মিত্র। দেশে প্রায় ১০.৪৮ শতাংশ বেকারত্বের হার বেড়েছে বলে জানান। মুদ্রাস্ফিতির হার ১৮.২ শতাংশ ।
একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি তো অন্যদিকে নতুন বছর থেকে জামা কাপড়ের ওপর জিএসটি বৃদ্ধির ঘোষণা কেন্দ্রের। এই সব বিষয়গুলোকে সামনে রেখে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন অর্থ দফতরের প্রধান উপদেষ্টা অমিত মিত্র। সোমবার দ্য ইনস্টিটিউট অফ কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত সিএফও লিডারশিপ সামিট ২.০ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন অমিত মিত্র। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ভারতে এখন পাইকারি দর সূচক ভিত্তিক মুদ্রাস্ফিতির হার ১৮.২ শতাংশ । গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে দেশে বেকারত্বের সংখ্যাও অনেকটা বেড়েছে। প্রায় ১০.৪৮ শতাংশ বেকারত্বের হার বেড়েছে বলে জানান অমিত মিত্র। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে ভারতে মুদ্রাস্ফিতির হার বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি। ভারতীয় অর্থনীতির এই অবস্থার জন্য মোদী সরকারকেই দায়ী করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর মতে কেন্দ্রের ত্রুটিপূর্ণ নীতির জন্যই ভারতের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতির কড়া সমালোচনা করেন অর্থ দফতরের প্রধান উপদেষ্টা অমিত মিত্র।
তিনি এই বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ভারতে যে বেসরকারি লগ্নি হচ্ছে না সে কথা কিন্তু প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী স্বয়ং। কেন্দ্রীয় সরকার কর্পোরেট করের হার হ্রাস করায় সংস্থাগুলোর মুনাফা বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির জেরে ভারতীয় মার্কেটে লগ্নি করতে কোনও বেসরকারী সংস্থা মোটেই এগিয়ে আসছে না। কেন্দ্রকে এক হাত নিয়ে এই প্রসঙ্গে অমিত মিত্র বলেছেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রের সঠিক কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত ছিল। যেভাবে মুদ্রাস্ফিতি ও বেকারত্বের হার ভারতে ক্রমশ বাড়ছে তা দেখে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এই পরিস্থিতিকে স্ট্যাগফ্লেশন বলে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন-সরছেন অমিত মিত্র, অর্থ দফতরের দায়িত্ব সামলাতে চলেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কী জানাচ্ছে তৃণমূল
আরও পড়ুন-কেন হল না GST পরিষদের বৈঠক, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর
একদিকে যখন ভারতের আর্থিক পরিস্থির অবনতির জন্য কেন্দ্রকে দুষেছেন তখন অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশংসা করে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সঠিক আর্থিক নীতি গ্রহণ করার জন্যই গত ২ বছরে অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতেও রাজ্যের অর্থমৈতিক ভিত কিন্তু মজবুতই রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ টেনে বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার মানুষের হাতে বিভিন্নভাবে টাকা তুলে দিয়েছেন। অন্যদিকে রাজ্য স্ট্যাম্প ডিউটি ও সার্কেল রেটের হার যথাক্রমে ২% ও ১০% কমানোর দরুণ সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোভিড পরিস্থিতিতেও পুনরায় চাঙ্গা হওয়ার সুযোগ পেয়েছে রিয়েল এস্টেট সংস্থাগুলো। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এহেন উদ্যোগ দেখেই করোনা পরিস্থিতিতেও বাজারের চাহিদায় কোনও ঘাটতি দেখা যায়নি।