আমারা দেশকে 'মা' বলি এবং চাঁদকে 'মামা' বলি। সামনেই যেহেতু রাখি পূর্ণিমা উত্সব, তার আগেই দেশ মায়ের তরফ থেকে চাঁদ মামার এই সাক্ষাত- সরাসরি ভাবে রাখি উৎসবের সমতুল্য অংশ হিসেবে প্রতিটি ভারতীয় হওয়ার আবেগকে ছুঁয়ে যায়।
চন্দ্রযান থ্রি মিশনের সাফল্যের পর থেকে দেশে আনন্দের বন্যা বইছে। এর কারণও 'চন্দ্রযান-৩'-এর সাহায্যে ভারত পৃথিবীর প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে যারা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছে। এই উপলক্ষ্যে আমরা সবাই পূর্ণ উদ্যমে 'ভারতবাসী হওয়ার জন্য গর্ববোধ করছি। এই দেশের চর্চিত স্লোগান যে আমারা দেশকে 'মা' বলি এবং চাঁদকে 'মামা' বলি। সামনেই যেহেতু রাখি পূর্ণিমা উত্সব, তার আগেই দেশ মায়ের তরফ থেকে চাঁদ মামার এই সাক্ষাত- সরাসরি ভাবে রাখি উৎসবের সমতুল্য অংশ হিসেবে প্রতিটি ভারতীয় হওয়ার আবেগকে ছুঁয়ে যায়।
এই চন্দ্রযান দেশের বর্তমান অর্থনীতিকে আরও উন্নত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ISRO-এর 'চন্দ্রযান-3'-এর সাফল্য ভারতকে চাঁদে পৌঁছানোর জন্য বিশ্বের মাত্র ৪টি দেশের ক্লাবে ফেলেছে। সেই কারণেই এখন কথা হচ্ছে 'স্পেস ইকোনমি' ছাড়িয়ে 'মুন ইকোনমি'-তে, এবং কম খরচে ভারত বিশ্বের অনেক জায়ান্টকে মুগ্ধ করেছে।
প্রথমে জেনে নিন 'চাঁদের অর্থনীতি বা মুন ইকোনমি' কী?
'অবতার- দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার' ছবিটি নিশ্চয়ই দেখেছেন বা এই বিষয়ে শুনেছেন। এতে পৃথিবী থেকে যে মানুষগুলো 'প্যান্ডোরার' মতো কাল্পনিক গ্রহে যায়, তারা কোনও সামুদ্রিক প্রাণী থেকে একটি বিশেষ পদার্থ বের করে পৃথিবীতে পাঠায়। পৃথিবীতে এর দাম কয়েক কোটি ডলার। এই কারণে, 'প্যান্ডোরা'-এর পুরও মহাকাশ মিশন কাজ করে। এবার এই উদাহরণটিকে 'চাঁদে'-এ ফিট করুন, অর্থাৎ চাঁদের পৃষ্ঠে এমন অনেক জিনিস পাওয়া গিয়েছে যা বিশ্বের অর্থনীতিতে একটি অন্য উচ্চতায় নিতে যেতে পারে। এর কারণে যে দেশ চাঁদে আগে পৌঁছাবে, তার দাবি আরও জোরালো হবে।
তবে 'চাঁদের অর্থনীতি' শুধু এই নয়। এর তিনটি পর্যায় রয়েছে - প্রথমত, চাঁদে একটি মহাকাশ অভিযান পাঠিয়ে অধ্যয়ন করা। এর পর চাঁদে মানুষ পাঠিয়ে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা মানেই 'চাঁদ মাম' পর্যটক হয়ে উঠা আর দূরের কথা নয়। যখন এই দুটি পর্যায় সম্পন্ন হয়, তখন তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বাণিজ্যিক ব্যবহার, চাঁদে একটি মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ, খনিজ সম্পদের ব্যবসা এবং অবশেষে চাঁদে মানুষের বসতি স্থাপন।
'চাঁদের অর্থনীতি' থেকে দেশে অর্থ বৃষ্টি হবে'
অনেক দেশ চাঁদে মহাকাশ অভিযান পাঠাচ্ছে। সম্প্রতি, রাশিয়ার 'লুনা-২৫' মিশনও পাঠানো হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে ব্যর্থ হয়। এর খরচও প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা, এবং ভারত এবং ইসরো এখানে জয়ী হতে চলেছে। ভারতের চন্দ্রযান-থ্রি মাত্র ৬১৫ কোটি টাকায় সম্পন্ন হয়েছে, এখন এই সাফল্যের কারণে, ভারত বাকি বিশ্বের জন্য সস্তায় 'চাঁদ মিশন' সম্পূর্ণ করতে পারে, অর্থাৎ বারবার চাঁদ মামা-র কাছে গিয়ে দেশে অনেক আয় হতে চলেছে। .
'মুন ইকোনমি' থেকে কীভাবে আয় করবেন?
একটি PwC রিপোর্ট বলছে যে ২০৪০ সালের মধ্যে, ১০০০ মহাকাশচারী চাঁদে থাকবে। এর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৪০ জন মহাকাশচারী চাঁদে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় চাঁদে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, স্পেস শাটল, টেলিস্কোপের পাশাপাশি অনেক টিভি শো এবং চাঁদ সম্পর্কিত অন্যান্য অনুষ্ঠান ইত্যাদি 'মুন ইকোনমি'-এর অংশ হয়ে যাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বড় স্কেল এই 'চাঁদ অর্থনীতির' আকার ৬৩৪ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে, এবং ভারত তার কম খরচে এবং উত্পাদনে দক্ষতার কারণে এর একটি বড় অংশ পেতে পারে।