৩১ ডিসেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হল ৪৬ তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক। জামাকাপড় ও জুতোর ওপর বাড়ছে না জিএসটি। জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
বর্ষশেষের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হল ৪৬ তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক (46th GST Council Meet)। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন(Nirmala Sitaraman) সহ রাজ্যের প্রতিপক্ষ মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হল এই বিশেষ বৈঠক। বিভিন্ন রাজ্যে জামা কাপড়ের ওপর ১২ শতাংশ জিএসটি বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে সেটা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৪৬ তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে (46th GST Council Meet)। পশ্চিমবঙ্গ ,তামিলনাড়ু সহ বিভিন্ন রাজ্যে জামা কাপড়ের ওপর আপাতত ১২ শতাংশ জিএসটি বৃদ্ধি পাচ্ছে না (To Put On Hold Higher GST Rate On Textile And Footwear)। এই বিষয়ের ওপর পরবর্তী যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটি আগামী জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে জানান হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। বর্তমানে ম্যানমেড ফাইবার বা MMF-র ওপর ১৮ শতাংশ কর ধার্য করা হয়। অন্যদিকে ম্যানমেড ফাইবার ইয়ার্নের ওপর করের হার ১২ শতাংশ এবং ফেব্রিকের ওপর ৫ শতাংশ পর্যন্ত কর লাঘু হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বরের আগে ১৭ সেপ্টেম্বরে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকে জুতো ও জামাকাপড়ের ওপর ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রকচার ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই আগামী ১ লা জানুয়ারী ২০২২ সালে জুতোর দামের ওপরও ১২ শতাংস জিএসটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও বলা হয়েছিল. ১২ শতাংশ ইউনিফর্ম জিএসটি ধার্য করা হবে রেডিমেড পোষাক ও টেক্সটটাইল প্রোডাক্টের ওপর। তবে সেক্ষেত্রে কর বৃদ্ধির হাত থেকে ছাড় পেয়েছিল সুতির বস্ত্র। উল্লেখ্য,শুক্রবারের বৈঠকে বলা হয়েছে, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, রাজস্থান এবং তামিলনাডু -তে ১ লা জানুয়ারি থেকে টেক্সটটাইল প্রোডাক্টের ওপর জিএসটি ৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মুলতুবি রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন-বর্ষশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস, ১ জানুয়ারি থেকে জুতো ও জামাকাপড়ের ওপর লাঘু হচ্ছে না জিএসটি
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা অমিত মিত্র অনেকদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে জামাকাপড়ের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে বদলানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, টেক্সটটাইলের ওপর যদি ১২ শতাংশ হারে জিএসটি বৃদ্ধি পায় তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাজ হারানোর আশঙ্কা থেকে যাবে। অবশেষে বর্ষশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে জামাকাপড় ও জুতো ব্যবসায়ীরা। জামাকাপড় ও জুতোর ওপর জিএসটি বৃদ্ধির ঘোষণার পর হোশিয়ারি শিল্পের তরফে অভিযোগ জানন হয়েছিল যে, করোনাকালে এমনিতেই ব্যাবসার হাল মন্দ তার ওপর এই সিদ্ধান্ত একেবারে শিরে সংক্রান্তির মত। এর ফলে সস্তার জামা-কাপড়েরও(Low Cost Garments) বেশ খানিকটা দাম বেড়ে যাবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমবে বিক্রির চাহিদা। আর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ধাক্কা খাবে উৎপাদন। পুঁজিরও অভাব হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল পোশাক তৈরিতে যুক্ত ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি(Small and Medium Organization)। কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কাড়তে পারে বস্ত্র শিল্পে যুক্ত ১৪ লক্ষ মানুষের কাজ। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ১ লক্ষ মানুষের কাজ হারাবার আশঙ্কা ছিল। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই বস্ত্র ও জুতোর ওপর জিএসটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছে কেন্দ্র।