দাবি ছিল। আর সেটা পেলেনও। এখন প্রশ্ন তিনি কি বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজিত বসুকে হারাতে পারবেন? আগেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল। তবে কিছুটা দেরিতে তালিকা প্রকাশ করলেও আগে থেকেই নাকি সব্যসাচী দত্তকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই কেন্দ্রীয় বিজেপির প্রার্থী তিনি। সূত্রের খবর সেইমত তিনি নাকি প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন। বিধাননগর কেন্দ্রটি রাজ্যের ভোটমানচিত্রের অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্র।
২০১১ ও ১৬- নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের সুজিত বসু। গত নির্বাচনে সব্যসাচি দত্ত জিতেছিলেন রাজারহাট নিউটাউন কেন্দ্র থেকে। তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে সব্যসাচী দত্ত বিধাননগর পুরসভার মেয়র ছিলেন। সাম্প্রতীক অতীতে দুজনেই যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন তাঁদের সম্পর্ক খুব একটা সুখকর ছিল না। দলীয় সূত্রের খবর এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দুই দুজনের মধ্যে বিবাদ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। একই সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর আনুগত্য লাভের জন্যই সুজিত বনাম সব্যসাচির লড়াই ছিল বিধাননগরবাসীদের কাছে পরিচিত। সল্টলেক, রাজারহাট, নিউটাউন জুড়েই আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা করেছিলেন দুজনে।
সব্যসাচী দত্ত ও সুজিত বসু- দুজনেই দীর্ঘ দিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। একটা সময় সিপিএমের এলাকার প্রথম সারির নেতা ছিলেন সুজিত বসু। সেই সময় মমতা হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন সব্যসাচি দত্ত। সেইসময় থেকেই দুজনে ছিলেন যুযুধান। পরবর্তীকালে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুজিত বসু। কিন্তু একই দলের সদস্য ও নেতা হলেও তাঁদের মধ্যে আপোষ হয়নি। তবে তাঁদের মধ্যে যে সম্পর্ক মধুর ছিল না তা নিয়ে তাঁরা কখনই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
তৃণমূল থেকে বিজেপি গিয়েও অব্যাহত 'মুকুল ম্যাজিক', ২০ বছর পর আবার ভোট যুদ্ধে আসছেন তিনি ...
বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ , মুকুল রায় ছাড়াও রয়েছে আরও চমক ...
দলবদল করার পর ধীরে ধীরে তৃণমূলের অন্দরেও আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন সুজিত বসু। শোভন চট্টোপাধ্যায় সরে যাওয়ার পর দমকল মনন্ত্রীর শূন্যপদটি দেওয়া হয়েছিল সুজিত বসুকে। অন্যদিকে তৃণমূল নেত্রী বিধানসভার মেয়র করেছিলেন সব্যসাচী দত্তকে। সূত্রের খবর শুধুই মেয়র পদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে রাজি ছিলেন না সব্যসাচী। এই পরিস্থিতিতে গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। তাঁর বাড়িতে এসে মুকুল রায় লুচি আলুরদম খেয়ে গিয়েছিলেন। যদিও সেই সময় দুজনেই দাবি করেছিলেন তাঁদের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎকার ছিল সেটি। কিন্তু পরবর্তীকালে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে স্পষ্ট হয় যায় সব্যসাচি আর বেশিদিন জোড়াফুলে নেই। সেইজন্যই বিধাননগের মেয়র পদ থেকে তাঁকে সরানো প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। দলবদলের পরই স্পষ্ট হয়ে যায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ। যদিও দল ছাড়়ার পর সব্যসাচি প্রকাশ্যে দলনেত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি।