বিধানসভা ভোটে এবারের মূলত ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকটি কেন্দ্র তার ব্যতিক্রম। এর অন্যতম দেগঙ্গা। দেগঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রটি বারাসাত লোকসভার অন্তর্ভুক্ত। দেগঙ্গা বিধানসভার চরিত্র রাজ্যে অন্যান্য বিধানসভা থেকে আলাদাই বলা চলে।
আরও পড়ুন, মমতার বিরুদ্ধে FIR, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘেরাও' মন্তব্য়ের জেরে অভিযোগ দায়ের কোচবিহারে
স্বাধীনতার পর এ কেন্দ্রে বেশ কয়েক দফা ক্ষমতা বজায় রাখছে কংগ্রেস। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত তারাই জেতে এই আসনে। ১৯৬৭ সালে জেকে বাংলা কংগ্রেস। ৬৯, ৭১, এই দু বছর এখানে জিতেছিল মুসলিম লিগ। ৭২ সালে এখানে ফের জেতে কংগ্রেস। ৭৭ সালে আবার এলাকা দখল নেয় মুসলিম লিগ। ৮২ সালে জেতে ফরোয়ার্ড ব্লক। ৮৭ সালে ফের মুসলিম লিগের বিধায়ক নির্বাচিত হন দেগঙ্গায়। ১৯৯১ সালে ফরোয়ার্ড ব্লক এই আসনের দখল নেয়। তারপর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই আসনে জিতেছিলেন সিংহ চিহ্নের প্রার্থীরা। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস এখান থেকে জেতে। ২০১৬ সালেও তারাই ক্ষমতা দখলে রেখেছে দেগঙ্গায়। এবার এই আসনে সংযুক্ত মোর্চার তরফ থেকে আইএসএফের করিম আলিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এই সমঝোতা মানেনি বামফ্রন্টের শরিক ফরোয়ার্ড ব্লক। তারা নিজেদের প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে এখানে। ফরোয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, এই আসন নিয়ে আলোচনা হয়নি। তাদের বক্তব্য তারা দীর্ঘদিন লড়াই চালিয়ে মুসলিম লিগের হাত থেকে এই আসন পেয়েছে। ফলে দেগঙ্গার দাবি তারা ছাড়বে না।
২০১১ সালের নির্বাচনে ১৭ হাজারের বেশি ভোটে এই কেন্দ্রে জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তারা জেতে প্রায় ২৬ হাজার ভোটে। দুবারই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ফরোয়ার্ড ব্লক।২০১১ সালে দেগঙ্গা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সাড়ে ১১ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৬ সালে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ১২ হাজারের সামান্য বেশি ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দেগঙ্গা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কাকলি ঘোষদস্তিদার পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৭১৫ ভোট। বিজেপির মৃণাল দেবনাথ ৪০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। ফরোয়ার্ড ব্লকের হরিপদ বিশ্বাস পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ২৯৮ ভোট। একদা মুসলিম লিগের দখলে থাকা এই কেন্দ্রে আব্বাস সিদ্দিকীর সেকুলার ফ্রন্ট নিঃসন্দেহে বেশ কিছু ভোট টানবে। আবার ফরোয়ার্ড ব্লকের ঘাঁটি হওয়ার সুবাদে বেশ কিছু ভোট পাবে তারাও। এই দড়ি টানাটানির খেলায় সুবিধে যে শেষ পর্যন্ত কে পাবে তা স্থির হবে পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণের দিন, ১৭ এপ্রিল।