তাপস দাস- বাম পতনের জন্য ইতিহাসখ্যাত ২০১১ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্ব বহাল রাখার জন্য তাঁর প্রয়োজন ছিল মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন জিতে আসা। ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে এই ভোটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন সুব্রত বক্সী। তিনি বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন, উপনির্বাচনে জিতে আসেন মমতা। সেবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ৭৩ হাজার ৬৩৫ ভোট, সিপিএমের নন্দিনী মুখার্জি পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৪২২ ভোট। ২০ ১৬ সালেও এই কেন্দ্রে মমতা জিতেছিলেন। সেবার তিনি পান ৬৫ হাজার পাঁচশো কুড়ি ভোট। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কংগ্রেসের দীপা দাসমুন্সী। তিনি ৪০ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে।
আরও পড়ুন- বড় চমক, ভোটে না দাঁড়াতে চাওয়া চিরঞ্জিৎ কি পরপর তিনবার ম্যাজিক দেখাবেন বারাসাতে
১৯৫২ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট হয়েছে। তারপর এই বিধানসভা কেন্দ্রের অস্তিত্ব ছিল না। ডিলিমিটেশন কমিশনের সুপারিশে, ২০১১ সালে ফের ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে পরিণত হয়। ফলে কেন্দ্র হিসেবে ভবানীপুর ভোট প্রত্যক্ষ করেছে কমই। একবার বাদ দিলে এখানে কখনওই বামেরা জয়ের মুখ দেখেনি। ১৯৬৯ সালের ভোটে এই কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন সিপিএমের সাধন গুপ্ত। এ ছাড়া শুরুতে কংগ্রেস ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষেই থেকেছে এই এলাকা।
২০১৬ সালের ভোটে এখানে বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নেতাজি পরিবারের চন্দ্রকুমার বোস। তিনি ২৬ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের মালা রায়ের লিড ছিল মাত্র ৩১৬৮ ভোটের। বিজেপির চন্দ্রকুমার বোস লোকসভার প্রার্থী হয়ে এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৫৭৯৬৯ ভোট পান। ২০২১-এর ভোটে অবশ্য সবই পাল্টেছে। মমতা নিজে ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রাম পাড়ি দিয়েছেন। দুর্গ রক্ষায় দায়িত্ব দিয়েছেন দলের প্রবীণ নেতা, সুভদ্র রাজনীতিক বলে পরিচিত শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। বিজেপি আবার তাঁর বিপরীতে দাঁড় করিয়েছে টলিপাড়ার তুর্কি, সদ্য শিবির বদলানো রুদ্রনীল ঘোষকে।
এ কেন্দ্রে দু পক্ষের টক্কর যে জোর হবে, তা কয়েকদিন আগে ফ্লেক্স ছেঁড়ার ঘটনায় অশান্তি, রুদ্রনীলের আহত হওয়া, এসব থেকে স্পষ্ট। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী কংগ্রেসের সাদাব খান এখানে একেবারেই তৃতীয় শক্তি হিসেবে পরিগণিত হবেন, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোট সপ্তম দফায়, ২৬ এপ্রিল।