অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে সমালোচনার মুখে মোদী সরকার
ময়দানে নামানো হল ডিআরডিও-কে
এলসিএ তেজস-এর প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েই তৈরি অক্সিজেন প্ল্যান্ট
রাতারাতি বসছে দিল্লি ও আশপাশের ৫ হাসপাতালে
ভারতে কোভিড মহামারির শুরুর পর থেকে ১ বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এই একটা বছরে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি, তা করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে কারণে আচমকা দেশে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তেই গেল গেল রব উঠেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা জুড়ে। অবশেষে, দেরিতে হলেও চাহিদা ও জোগানের ঘাটতি মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে পাঁচটি মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
মঙ্গলবার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্ল্যান্টগুলি স্থাপনের দায়িত্ব নিয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও (DRDO)। আর এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে, প্রধানমন্ত্রী নাগরিক সহায়তা ও ত্রাণ তহবিল বা পিএমকেয়ার্স (PMCARES) থেকে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এই পাঁচটি মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে।
রাজধানী দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকার মোট ৫টি হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি স্থাপন করার জন্য। এই ৫টি হাসপাতাল হল, এইমস ট্রমা সেন্টার, ডা. রাম মনোহর লোহিয়া (আরএমএল) হাসপাতাল, সফদরজং হাসপাতাল, লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিকেল কলেজ এবং হরিয়ানার ঝজ্বর এইমস। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই এই রকম দুটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করার প্রয়োজনীয় সাজ-সরঞ্জাম দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছে। এইমস এবং আরএমএল হাসপাতালে ইনস্টলেশন প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
এই মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি প্রতি মিনিটে এক হাজার লিটার অক্সিজেন তৈরি করতে পারে। প্রতি মিনিটে ৫ লিটারের প্রবাহ হারে ১৯০ জন রোগীর চাহিদা পূরণ করতে পারবে এবং প্রতিদিন ১৯৫টি সিলিন্ডার ভর্তি করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এলসিএ তেজস-এর অক্সিজেন তৈরির জন্য যে প্রযুক্তি তৈরি করেছে, ডিআরডিও, সেই একই প্রযুক্তি এই মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি তৈরির কাজে লাগানো হয়েছে।
কোয়েম্বাটোর-ভিত্তিক ডিআরডিও-র এক প্রযুক্তিগত অংশীদার সংস্থা এই প্ল্যান্টগুলি সরবরাহ করছে। তাদেরকে মোট ৪৮টি মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্টের অর্ডার দিয়েছে সরকার। এছাড়া, মেসার্স টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড-কে ৩৩২ টি প্ল্যান্ট তৈরির বরাতও দেওয়া হয়েছে। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সেগুলি সরবরাহ করা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এগুলি স্থাপন করা হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, হাসপাতালেই এই প্ল্যান্টগুলি স্থাপন করায়, অক্সিজেন পরিবহনের সমস্যাগুলি দূর করা যাবে।