কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েগেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে রবিবার রাত ৯টার সময় মাত্র ৯ মিনিটের জন্য সময় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আলো বন্ধ করে মোমবাতি, টর্চ বা অন্য যে কোনও আলো জ্বালিয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে তেজের প্রকাশ দেখাতে বলেছিলেন। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় জল্পনা। একসঙ্গে দেশের সমস্ত বাড়ির আলো যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। কারণ একই সঙ্গে বিদ্যুতের খরচ যদি কমে যায় তাহলে রীতিমত চাপ পড়তে পাওয়ার গ্রিডের ওপর। তারপ্রভাবেই বসে যেতে পারে পাওয়ার গ্রিড।
কিন্তু এই বিপর্যয়ের থেকে বেরিয়ে আসার উপায়ও রয়েছে। সূত্রের খবর শনিবারই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফ থেকে জানান হয়েছিল যে শুধু যেন গৃহস্থের বাড়ির আলোই বন্ধ করা হয়। সূত্রের খবর, কলকাতার একটি বেসরকারি বিদ্যুত সরবরাহ সংস্থা তাদের সকল গ্রাহকের কাছেই আর্জি জানিয়েছে রাত ৯টা সময় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে নাগরিকরা যেত শুরু গৃহস্থের বাড়ির আলোর স্যুইচই বন্ধ করেন। তাঁরা যেন কিছুতেই রাস্তার আলো সমস্ত আলো জ্বালিয়ে রাখেন। বাড়ির ফ্যান ও এসি বন্ধ করার কথা প্রধানমন্ত্রী বলেননি বলেও গ্রাহকদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জানান হয়েছে রাত ৮.৫৫ মিনিট থেকে যে সব বৈদ্যুতিন সরঞ্জমাম বাড়িতে ব্যবহৃত হয় তা যেন চালিয়ে রাখা হয়। বাড়িতে থাকা বিদ্যুৎচালিত সমস্ত জিনিস বন্ধ করে দেওয়ার মত অতিউৎসাহিত পদক্ষেপ না নেওয়ায়ই ভালো। বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে হাসপাতালগুলিকে।
আরও পড়ুনঃ ১২ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩০২, ক্রমশই প্রকট হচ্ছে নিজামুদ্দিন যোগ
আরও পড়ুনঃ কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি ঘিরে গুলি বোমার লড়াই, রণক্ষেত্র পাড়ুইয়ে মৃত ১
সূত্রের খবর রাত ৯টায় চ্যালেঞ্জের আওতার বাইরে থাকবে হাসপাতাল, থানাসহ অন্যান্য জরুরী পরিষেবাগুলি। সেখানে সমস্ত আলো পাখা জ্বালিয়ে রাখাই ভালো। পাওয়ার সিস্টেম অপারেশন কর্পোরেশন লিমিটেড ভারতের আলোক ম্যাপিং করে দেখেছে ২-৪ মিনিটের জন্য দেশের আলো বন্ধ করে দিলে বিদ্যুতের খরচ এক ধাক্কায় ১২-১৩ জিগাওয়াট কমে যাবে। তাই বিপর্যয় এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থা গুলিকে রাত ৮.৩০ -১০.০০টা পর্যন্ত ফিডার সুইচিং অপারেশন এড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন চলছে গোটা দেশে। এই অবস্থায় বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলচাল। বন্ধ রয়েছে দেশের একাধিক কারখানা। অধিকাংশ মানুষই ঘরবন্দি। রীতিমত বন্ধ হয়ে পড়ে একাধিক সরকারি বেসরকারি অফিস। বন্ধ হয়ে রয়েছে দোকান-বাজার থেকে শুরু করে সিনেমা হল ও শমিং মল। এই অবস্থায় দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে যদি অতিউৎসহে সব আলো একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে বিদ্যুৎ বিপর্যের সম্মুখীন হতে পারে।শনিবারই পাওয়ার সিন্টেম অপারেশন কর্পোরেশন, গাইড লাইন জারি করেছে। যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ার ও তাঁর বৃদ্ধি- এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া হবে তা বলা রয়েছে।
যদিও বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে জানান হয়েছে, ভারতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড রীতিমত শক্তিশালী একটি সংস্থা। সবরকম পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষমতা ওই সংস্থার রয়েছে। তবে সমস্ত বিদ্যুৎ কর্মীদের রবিবার সন্ধ্যে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত জেনারেটিং স্টেশন, সাবস্টেশন ও লোড ডেসপ্যাচ কেন্দ্র গুলিতে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।