ধারাভিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ১৩
মৃত্যু হয়েছে আরও ১ জনের
ধারাভি সিল করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন
বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে নিত্য প্রয়োজনী সামগ্রী
করোনাভাইরাসের সংক্রমিত হয়ে আরও একটি মৃত্যু দেখল ধারভি। মুম্বইয়ে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তত বস্তি এটি। প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের বাস। যাঁদের অধিকাংশই অভিবাসী শ্রমিক। তবে ধারাভির জনঘনত্ব প্রচুর। এই বস্তিতে ব্যক্তিগত পরিসরের তেমন কোনও বালাই নেই। তাই সামাজিক দূরত্ব এখানে কতটা লাগু হয়েছে তা নিয়ে রীতিমত ধ্বন্দে রয়েছে উদ্ধব ঠাকরে প্রশাসন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লকডাউন ঘোষণার অনেক আগে থেকেই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সরকারি বেসরকারি একাধিক সংস্থা। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বার হতেও নিষেধ করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু তাও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পারেনি মহারাষ্ট্র সরকার। বর্তমানে মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩৫। যা দেশের মধ্যে সর্বাধিক এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের।
ধারাভিকে বাণিজ্যনগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বললে খুব একটা ভুল হবে না। ধারাভিতেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্র সরকারের দেওয়া তথ্য আনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা ১৩। বৃহস্পতিবার ধারাভির এক বাসিন্দার মৃত্য হওয়া মৃতে সংখ্যা তিনে এসে ঠেকেছে।
পাঁচ বর্গকিলোমিটারের এই বস্তিতে প্রায় ৭০ লক্ষ বাড়ি রয়েছে। বর্তমানে মাত্র ৩ হাজারের সামান্য বেশি পরিবারকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠান হয়েছে। তবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ও লকডাউন একশো শতাংশ করতে পুরো বস্তিটাই সিল করে দিয়েছে। কিন্তু তা কতটা মানা হবে তা নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। গ্রেটার মুম্বই পুরসভার এক কর্তা জানিয়েছেন স্থানীয়রা নিজেদের জীবনের থেকেও বেশি চিন্তিত জীবিকা নিয়েছে। তাই অধিকাংশ মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠান সমস্যার। একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা। তিনি জানিয়েছেন, ধাবাভির বাসিন্দাদের ঘরে বসিয়ে রাখাটা রীতিমত কঠিন কাজ। আর স্থানীয় বাসিন্দাদের এই আচরণেই চিন্তা বাড়িয়েছে মহারাষ্ট্র প্রশাসনের।
তবে ধারাভির বাসিন্দাদেরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। এক গ্যালন জল কিনতেই তাঁদের খরচ হয় ২৫ টাকা। বর্তমানে রুজিরুটি প্রায় বন্ধ। তাই কী করে তারা ওই দামি জল দিয়ে বারবার হাত ধোবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্যসরকার গুলি স্বাস্থ্য বিধি মেনে টলার নির্দেশ দিয়েছে করোনা মোকাবিলায়। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ ৮০ মানুষের জন্য বরাদ্দ একটি মাত্র শৌচাগার। সেখানে কী করে মানা হবে সামাজিক দূরত্ব।
আরও পড়ুনঃ করোনার কালো ছায়া রেস্তোরাঁয়, লকডাউনের ধাক্কা কাটাতে লেগে যেতে পারে ২ বছর
আরও পড়ুনঃ লকডাউনের কারণে মানসিক অবসাদ বাড়ছে, তাই কি ঘরোয়া হিংসার শিকার শিশুরা
তবে সংক্রমণ রুখতে রীতিমত কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে । সিল করে দেওয়া হয়েছে ধারাভির বিস্তীর্ণ এলাকা। সমস্ত ফল ও সবজির দোকানও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ওষুধের দোকানই খোলা রয়েছে। আগামীদিন বাড়ি বাড়ি নিত্য প্রয়োজনী দ্রব্য পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান হয়েছে গ্রেটার মুম্বই কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে।