ভয়ানক পরিস্থিতি। দেশ জুড়ে রেকর্ড সংক্রমণ করোনার। তিন লক্ষেরও বেশি করোনা আক্রান্ত। এরই মধ্যে রোগির চাপে ধুঁকছে দেশের করোনা হাসপাতাল ও কোভিড সেন্টারগুলি। নয়াদিল্লির কৈলাশ হাসপাতালে মজুত রয়েছে মাত্র তিন থেকে চার ঘন্টার অক্সিজেন সাপ্লাই। নয়ডার বিখ্যাত এই করোনা হাসপাতালে এখন বন্ধ রয়েছে করোনা রোগি ভর্তি প্রক্রিয়া। ফলে রীতিমত জীবন সংকট শুরু হয়েছে করোনা রোগিদের।
আরও পড়ুন - সুনামির আকার নিচ্ছে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ, কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যায় রেকর্ড গড়ল ভারত
কৈলাশ হাসপাতালে এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছেন সেখানে ভর্তি হওয়া করোনা রোগিরা। ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন্দ্র ও নয়ডা জেলা প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছে। হাসাপাতালে যাতে অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়, তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার আবেদন করা হয়েছে। কৈলাশ হাসপাতালের গ্রুপ ডিরেক্টর রীতু বোহরা জানিয়েছেন প্রশাসেনর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এই সংকট দ্রুত মিটে যাবে বলেই আশা করছেন তিনি।
তিনি জানান, নয়ডা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার থেকেই অক্সিজেনের সরবরাহে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে ভারতীয় বায়ু সেনা। অক্সিজেন কন্টেনার পৌঁছে দেওয়া, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করবে বায়ুসেনা বলে জানানো হয়েছে।
সব কিছু ছাপিয়ে যাচ্ছে করোনাভাইরাসে দ্বিতীয় তরঙ্গ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছে ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজারেরও বেশি জনের। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। করোনাভাইরাসের প্রথম তরঙ্গ তুলনায় দ্বিতীয় তরঙ্গ এতটাই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে যাকে তরঙ্গ না বলে সুনামি বলাই শ্রেয় বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। দৈনিক সংক্রমণ বিশেষজ্ঞদের সব হিবেস ওলট পালট করে দিচ্ছে। গত ১৫ এপ্রিল থেকে আক্রান্ত ২ লক্ষের আশপাশে ছিল। এবার সেই গণ্ডীও অতিক্রম করল দৈনিক সংক্রমণ।
আরও পড়ুন - করোনা আক্রান্ত সাধন পান্ডে, ভোটের মধ্যেই একাধিক প্রার্থী পজিটিভ হওয়ায় চিন্তায় TMC
করোনাভাইরাসের সংকট রুখতে অক্সিজেন সরবরাহের ওপর যেমন জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তেমনই করোনার গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ রেমডেসিভিরেরও বিদেশে রফতানি বন্ধ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপান হয়েছে। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে প্রথম ঢেউয়ের থেকে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ আরও প্রবল আকার নিয়ে আছড়ে পড়েছে ভারতে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বর্তমানে ভারতে সব থেকে বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন।তবে দ্বিতীয় তরঙ্গ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সংক্রমণের মাত্রা আরও বাড়তে বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত দেশগুলির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। তবে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তা রীতিমত চাপ বাড়াচ্ছে দেশে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ওপর।