কথায় বলে' ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে'। আর এই প্রবাদ আক্ষরিক অর্থেই প্রমাণ করে দেখালেন করোনায় আক্রান্ত রায়গঞ্জ শহরের এক চিত্র শিল্পী। নিজেই লড়াই করছেন মারণ ভাইরাসের সঙ্গে। তারপরও কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মন থেকে আতঙ্ক দূর করার পাশাপাশি তাদের ছবি আকা শেখাচ্ছেন তিনি। নিজেকেও নিজের শিল্পকলার মাধ্যমে ব্যস্ত রেখেছেন তিনি। কোভিড হাসপাতালের ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে চিকিৎসাধীন রোগীরাও তার এই উদ্যোগে সামিল হয়েছে।
রায়গঞ্জ শহরের চিত্র শিল্পী তথা অঙ্কন শিক্ষকের কাজ করেন অভিজিৎ সরকার। পরেবেশকর্মী হিসেবেও কাজ করেন তিনি। কিন্তু বিশ্ব মহামারী ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাননি তিনি। কর্ণজোড়া কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অভিজিৎ সরকার। হাসপাতালের বেডে বসেই নিজের শিল্পের মাধ্যমে সচেতনতার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালে তিনি ছাড়াও ভর্তি রয়েছেন অনেকেই। আতঙ্কও গ্রাস করেছে অনেককেই। সেই আতঙ্ক কাটাতে ও মানসিকভাবে সকলকে সুস্থ রাখতেই নিজের পেনসিল ও তুলিকে 'ওষুধ' হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ছবি আঁকছেন কখনও আবার অন্যান্যদের শেখাচ্ছেন ছবি আঁকা। এভাবেই নিজেকে ও সকলকে ব্যস্ত রেখেছেন অভিজৎ সরকার। তিনি বলেছেন,'সকাল থেকে শুয়ে-বসে না কাটিয়ে, এখানে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য ছবি এঁকে সময় কাটাচ্ছি। বাড়ি থেকে আঁকার জিনিসপত্র আনিয়ে নিয়েছি। শিল্প সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের মন যেমন ভাল থাকছে, তেমনই এই রোগে আক্রান্ত আমার সহযোদ্ধাদেরও কিছুটা আনন্দ দিতে পারছি।'
নিজেদেরকে একটু অন্যভাবে ব্যস্ত রাখতে পেরে খুশি অনান্য রোগীরাও। জয় পোদ্দার নামে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন,' আমরাও তার থেকে ছবি আকা শিখছি।অনেক মজার ছবি একে গোটা হাসপাতালে এক আনন্দময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আতংক ভুলে আমরা জীবন সংগ্রামে মেতে রয়েছি।' রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ওই শিক্ষকের রোগীদের মানসিকভাবে ভালো রাখার এই প্রয়াসকে আমি কুর্নিশ জানাচ্ছি। সত্যিই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে পেনসিল ও আর্ট পেপারে জীবনের জয়গান রচনা করছেন অভিজিৎ সরকার।