তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থার্ড টার্মের প্রথম দিনেই কোভিড ইস্যুতে মোদী-কে আক্রমণ তাঁর। কড়া সুরেই মমতা অভিযোগ করলেন কোভিড ১৯ নিয়ে কোনও স্বচ্ছ নীতি নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। আর এই ইস্যুতেই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে অবিলম্বে স্বচ্ছ কোভিড ১৯ নীতি তৈরি করতে আর্জি রেখেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার সকালে রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে শপথ নেন। এরপরই তিনি নবান্নে প্রবেশ করে কোভিড নীতি এবং রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকের পরই সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান কেন্দ্রীয় সরকারের অস্বচ্ছ কোভিড নীতি-তে বিপদে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্য। কোভিড ১৯-এর চিকিৎসা থেকে শুরু করে অক্সিজেন সরবরাহ এবং টিকাকরণে কোনও স্বচ্ছতা বজায় থাকছে না। এর ফলে অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের ভাগে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য আসার কথা সেগুলো এসে পৌঁছছে না। পশ্চিমবঙ্গের অক্সিজেন চলে যাচ্ছে অন্য রাজ্যে। এমন অভিযোগও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের অক্সিজেন দিয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তর প্রদেশকে। এমনকী, ৫ মে থেকে রাজ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে টিকাকরণ চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা করা যায়নি। কারণ এর জন্য রাজ্য সরকার ৩ কোটি টিকা চেয়েছিল। কেন্দ্র মাত্র দেড় লক্ষ টিকা পাঠিয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ইউনিভার্সাল টিকাকরণেরও দাবি রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক সম্মেলনে সে কথাও জানান তিনি।
দেড় লক্ষ টিকা আসায় রীতিমতো ক্ষিপ্ত মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সাফ বলে দেন, 'মনে হচ্ছে ভিক্ষে দেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রচুর স্থানে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার বহু জিনিস বেশি করে পাঠানো হয়েছে এবং সেগুলো সেখানে কোনও কাজেই লাগছে না। যে রাজ্যে এর চাহিদা রয়েছে সেখানে পাঠানো গেল কাজে লাগত।' মমতা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যই হল এখন কীভাবে মানুষকে রক্ষা করা যাবে সেটা। রাজ্য সরকার যে টিকাকরণের দ্বিতীয় ডোজকেই গুরুত্ব দিচ্ছে বেশি করে, সে কথাও মুখ্যমন্ত্রী বলেন। অক্সিজেনের অভাব রুখতে শিল্পসংস্থাগুলির কাছে রাজ্য সরকার আবেদন করেছে বলেও জানান মমতা। বেশকিছু শিল্প সংস্থা ইতিমধ্যেই তাদের অক্সিজেন ট্যাঙ্কার ও সিলিন্ডার রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে পাঠিয়েছে।