বৃহস্পতিবার থেকে শহরের দুটি সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার যথা গোরাবাজার নিমতলা এলাকা ও মেছুয়া বাজারে লকডাউন ঘোষণা করা হল। এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী।
কালীপুজোর (Kali Puja) আগেই রাজ্যে ফের বাড়ছে দৈনিক করোনা (Daily Corona Cases) আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯১৯ জন। তার মধ্যে কলকাতায় (Kolkata) আক্রান্তের সংখ্যা ২৪২। যা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। কলকাতার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও (Murshidabad) বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন। কালীপুজোর আগে জেলায় এভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বাড়ছে উদ্বেগ। জেলার সদর শহর বহরমপুরে (Berhampore) করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন যৌথভাবে বড় সিদ্ধান্ত নিল।
বৃহস্পতিবার থেকে শহরের দুটি সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার যথা গোরাবাজার নিমতলা এলাকা ও মেছুয়া বাজারে লকডাউন ঘোষণা করা হল। এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী (Sharad Kumar Dwivedi)। এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে। গোরাবাজার নিমতলার সবজি বাজার, মাছবাজার এবং পাশ্ববর্তী এলাকায় দিনের নির্দিষ্ট সময় লকডাউন থাকবে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় প্রায় ৩৫০টি দোকান বন্ধ থাকবে। দুপুর ১২টা থেকে পরের দিন সকাল ৬ টা পর্যন্ত ওই এলাকার বাসিন্দারা খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বেরতে পারবেন না।
আরও পড়ুন- দিওয়ালির আগে সুখবর, অবশেষে হু-এর ছাড়পত্র পেল কোভ্যাক্সিন
আরও পড়ুন- কালীপুজোর আগেই রাজ্যে ফের বাড়ল দৈনিক করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত ১৪
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় কয়েক দিন ধরেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে। সেই কারণেই ওই এলাকায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ সারার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, নির্দেশ সবাইকে মেনে চলতে হবে। জনগণের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এখন ৫৬ জন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন। যেসব এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেখানে কন্টেনমেন্ট জোন করা হচ্ছে। তবে বহরমপুর শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন আধিকারিকরা।
বহরমপুরের মহকুমা শাসক প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বহরমপুরের গোরাবাজারের ওই এলাকায় ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। বাসিন্দারা সবরকম জরুরি পরিষেবা পাবেন। তবে অকারণে বাড়ি থেকে তাঁদের বেরনো চলবে না। নির্দিষ্ট সময়ের পরে সব দোকান বন্ধ হয়ে যাবে।" এনিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, বাসিন্দাদের বেপরোয়া মনোভাবের জন্যই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। অধিকাংশ বাসিন্দা এখনও মাস্ক ছাড়াই ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন। সামাজিক দূরত্ববিধি অনেক দিন আগেই শিকেয় উঠেছে। বহরমপুর জেলার সদর শহর হওয়ায় প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা এখানে ভিড় করছেন। এই জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ৩২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৩ হাজার ৯৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েকদিন আগেও জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশ খানিকটা কম ছিল। ফলে ফাঁকা ছিল করোনা হাসপাতালগুলি। কিন্তু, এখন আবার সেখানে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি অমিয়কান্তি বেরা বলেন, "মানুষকে সচেতন হতে হবে। তা না হলে করোনার সঙ্গে মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।"