যতদিন যাচ্ছে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কবে যে এ রাজ্য ফের সচল হবে! যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে রেখেছেন। লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন গরিব মানুষেরাই। নিজের সামান্য সঞ্চয় থেকে তাঁদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করলেন এক কাশ্মীরি শালওয়ালা। মানবিকতার সাক্ষী থাকল হুগলির চুঁচুড়া।
আরও পড়ুন: করোনায় ওষুধ সঙ্কটে রাজ্য, সুগার, প্রেসার থেকে অম্বলের ওষুধ পাওয়া নিয়ে সমস্যা
সে প্রায় এক যুগ আগের কথা। কাশ্মীর থেকে শাল ও সোয়েটার বিক্রি করতে এ রাজ্যে এসেছিলেন আরশাদ হোসেন। আর ফেরা হয়নি। ভালোবেসে বিয়ে করেছেন বাঙালি তরুণীকে, ঘর বেঁধেছেন হুগলির চুঁচুড়ায়। স্ত্রী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এখন চুঁচুড়ায় ময়নাডাঙা এলাকায় থাকেন আরশাদ। লকডাউনের সময় যখন সকলেই নিজের ও পরিবারের লোকেদের নিয়ে ব্যস্ত, তখন গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কাশ্মীরি যুবক। কীভাবে? পাড়ার মুদির দোকানে আরশাফ বলে রেখেছেন যে, তাঁর লেখা স্লিপ জমা রেখে যেন বিনামূল্যে অসহায় মানুষদের চাল, ডাল-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়। দাম তিনি মিটিয়ে দেবেন। খবর পেয়ে এখন অনেকেই স্লিপ নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবেই নিজের সামান্য সঞ্চয় থেকে কমপক্ষে ৫০ জন মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করেছেন আরশাফ হোসেন।
আরও পড়ুন: লকডাউন সফল করতে প্রশাসনের তরফে বাজার বন্ধের আবেদন, রীতিমত চিন্তায় রায়গঞ্জবাসী
উল্লেখ্য, করোনা মোকাবিলায় যেমন লকডাউন জারি করেছেন, তেমনি বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা দরিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন, তাঁরা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিঃখরচায় রেশন থেকে দু'টাকা কেজি দরের চাল পাবেন। কিন্তু স্রেফ সরকারি উদ্যোগই কি যথেষ্ট? পরিস্থিতি মোকাবিলা সাধারণ মানুষকেই তো এগিয়ে আসতে হবে। আর সেই কাজটিই করছেন কাশ্মীরের আশরাফ হোসেন। তাঁর উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে সকলেই।