সুরের আকাশে মুক্তির খোঁজ, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মুর্ছনায় ভাসছে মল্লভূমি বিষ্ণুপুর

  • করোনা ভাইরাসে আক্রমণে বিপন্ন সভ্যতা
  • লকডাইনে থমকে গিয়েছে চারপাশের জগৎ
  • সুরের আকাশেই মুক্তির খোঁজ বিষ্ণুপুর ঘরানা শিল্পীদের
  • ঘরে ঘরে চলছে সঙ্গীত সাধনা
     

Tanumoy Ghoshal | Published : Apr 6, 2020 8:29 PM IST

আজানা ভাইরাসের আতঙ্কে মানব সভ্যতা আজ বিপন্ন। ঘরবন্দি থাকতে থাকতে সকলেই যখন কম-বেশি হতাশার অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি, তখন শাস্ত্রীর সঙ্গীতের মাধ্যমে নতুন প্রাণশক্তি ফিরে পাচ্ছেন বিষ্ণুপুর ঘারানা শিল্পীরা। বাঁকুড়ার এই শহরের ঘরে ঘরে এখন চলছে সঙ্গীতের সাধনা। 

করোনা নামে ভাইরা মানব সভ্যতাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এক কঠিন সত্যের মুখোমুখি। জাতি, ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ দেবালয়। বিপন্ন সভ্যতাকে প্রাণপণে আলো দেখিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান। তেমনই এক বিজ্ঞান শব্দ বিজ্ঞান । যুগে যুগে মানুষ এই বিজ্ঞানকে ব্যবহার করেছে বিভিন্ন ভাবে । আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানেও রোগমুক্তির জন্য সুর তাল লয়ে বাঁধা শব্দের প্রয়োগ নতুন নয়। বেদ,বেদান্ত থেকে শুরু করে চরক সুশ্রুত সকলেই মেনে নিয়েছেন আসলে শব্দই ব্রহ্ম । সুর ,তাল, লয়, ছন্দে বাঁধা শব্দের সেই অসীম শক্তি কি পারবে করোনা বিধ্বস্ত মানুষকে যাবতীয় অবসাদ , দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে? অসম্ভব নয় বলছেন বিষ্ণুপুর ঘরানার শিল্পীরা। নিজেদের চার দেওয়ালে বন্দী রেখে আপাতত শব্দের সেই সাধনাতেই মগ্ন রয়েছেন তাঁরা। লক ডাউনে নিঃস্পন্দ বিষ্ণুপুরের রাস্তায় কান পাতলে এখন ভেসে আসছে ধ্রুপদ , ধামার খেয়াল ও যন্ত্রসঙ্গীতের সুর মূর্ছনা।  সংগীত শিল্পীরা ধ্রুপদী সঙ্গীতের সুরে ও যন্ত্রসঙ্গীতের নানান রাগের তালে  ভগবান কৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করে চলেছেন। 

মন্দিরের শহর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর। মল্ল রাজারা একসময়ে এই শহরে তৈরি করেছিলেন একাধিক কৃষ্ণমন্দির। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি বিষ্ণুপুরে তৈরি হয়েছিল শাস্ত্রীর সংগীতের এক নয়া ঘরানা, ধ্রপদ।  এই গানের সুর মুর্ছনায় যেমন রয়েছে সর্বশক্তিমান কৃষ্ণের জীবনদর্শন, তেমনি বিষ্ণুপুরের নগরদেবতা মানবজীবনের মুক্তির আকুতি। কথিত আছে, মল্লরাজার শহর বিষ্ণুপুরকে বর্গীদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন স্বয়ং মদনমোহন। শহরবাসীর বিশ্বাসে আজ সমানভাবে প্রাসঙ্গিক শ্রীকৃষ্ণ। লকডাউনে থমকে যাওয়া পৃথিবীতে যেন ধ্রুপদ,ধামারে মতো শাস্ত্রী সঙ্গীতের সুরও যেন নতুন করে বাঁচার প্রেরণা দিচ্ছে বিষ্ণুপুরবাসীকে। 

Share this article
click me!