একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ফতোয়া! করোনাকালে মুর্শিদাবাদে প্রতিবেশীদের জারি করা 'ফতোয়া'র জেরে বাড়ি ঢুকতে পারছেন না এক বৃদ্ধা। মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় একদল নাছোড়বান্দা প্রতিবেশীদের ফতোয়ার চাপে পড়ে নিজের বাড়িতেই ঢুকতে পারছেন না বৃদ্ধা। ফলে বাধ্য হয়ে ভবঘুরেদের মতো ব্যাগ নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছেন পঁয়ষট্টি বছর পার করা এক বৃদ্ধা।
বৃহস্পতিবার জেলার সীমান্ত লাগোয়া গুড়া পাশলা গ্রামের এই ঘটনা প্রশাসনের নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। রাজ্য জুড়ে চলছে করোনা বিধিনিষেধ। এরই মধ্যে বিশেষ প্রয়োজনে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও বাড়ির ভিতর প্রবেশ করতে পারছেন না কল্পনা মার্জিত নামের ওই বৃদ্ধা। কার্যত প্রতিবেশীদের একাংশ ফতোয়া জারি করেছেন ঐ বৃদ্ধার নামে!
কি রয়েছে সেই ফতোয়ায়? জানা যায়,'তিনি কোন মতেই লকডাউন চলাকালীন বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবেন না'। কার্যত নীতি পুলিশের ভূমিকায় নিজেরাই এমন বিচিত্র ফতোয়া জারি করেছে একদল মানুষ। সে ক্ষেত্রে তাদের কথামতো করোনা পরীক্ষা করার পর ওই মহিলাকে বাড়িতে প্রবেশাধিকার দেবেন তারা। এমন ফতোয়ায় রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে।
এই ব্যাপারে স্থানীয় গুড়া পাশলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুবর্ণ কুমার মন্ডল বলেন ওই মহিলা বাড়ি ঢুকতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হবে। গুড়া পাশলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গুড়া এলাকার বাসিন্দা কল্পনা মার্জিত বেশ কিছু দিন আগে নিজের গ্রামের বাড়ি থেকে বিশেষ প্রয়োজনে ছোট ছেলের বাড়ি কলকাতাতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান ফেরার মুখেই রাজ্য সরকার করোনা বিধি নিষেধ চালু করায় ওই মহিলা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
কলকাতা থেকে প্রায় আড়াইশো কিমি পথ পেরিয়ে নিজ এলাকায় পৌঁছেও গ্রামের মানুষের ফরমান জারিতে শেষ পর্যন্ত ঘরে ঢুকতে পারছেন না ওই বৃদ্ধা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন গোটা দেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক সেই সময় দুটি ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েও মানুষের আতঙ্কের জেরে ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে কল্পনা দেবীর মতো মানুষকে।