শুধুমাত্র পুরুলিয়া পৌরসভা এলাকাতেই ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৫জন। আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আসানসোল শিল্পাঞ্চল ঘেঁষা নেতুড়িয়া ব্লক।
পুরুলিয়া জেলায় (Purulia District) ক্রমশ হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমনের (Corona Situation) সংখ্যা। পুরুলিয়া সদর (Purulia Sadar) শহর থেকে জেলার প্রতিটি ব্লকে (Block) বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে ১১৯৭জন। শুধুমাত্র পুরুলিয়া পৌরসভা এলাকাতেই ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৫জন। আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আসানসোল শিল্পাঞ্চল ঘেঁষা নেতুড়িয়া ব্লক। নেতুরিয়া ব্লক এলাকায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪। নেতুড়িয়ার হাড়মাড্ডি ব্লক হাসপাতালের ব্লক সাস্থ্য আধিকারিক সহ মোট ২০জন স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় এলাকা স্বাস্থ্যপরিষেবা প্রায় বিঘ্নিত হওয়ার মুখে।
অন্যদিকে ঝালদা ব্লক হাসপাতালে ও এক সাথে ৬ জন স্বাস্থ্য কর্মী কোভিড পজিটিভ হওয়ায় এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবায় বাড়ছে চাপ। তবে পুরুলিয়া পৌরসভার ২৩টি ওয়ার্ড সহ বাজার এলাকায় করোনার প্রকোপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ চাপে পুরুলিয়া পৌরসভা। তবে পুরুলিয়া পৌরসভার প্রশাসক নবেন্দু মহালি, জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা শাসক মুফতি শামীম শওকত, সহ পুলিশ আধিকারিকরা যৌথ ভাবে দল বেঁধে ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া পৌরসভা এলাকার ২৩টি ওয়ার্ডের কোভিড নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠন করা হয়েছে কোভিড ম্যানেজমেন্ট টিম।
এই টিম শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের কোভিড সংক্রান্ত তথ্য ও অন্যান্য বিষয় দেখবেন। পৌরসভার এই ম্যানেজমেন্ট টিম মনিটরিং এর জন্য রয়েছেন দুজন চিকিৎসক। শহরের করোনা আক্রান্ত রোগীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন চট জলদি যাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এই সমস্ত বিষয়ে এক ছাতার নিচে এনে পৌরসভা এই টিম তৈরি করেছে। পৌরসভার উপকণ্ঠে গোশালার কাছে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমকে সেফ হোমও করা হয়েছে। অন্যদিকে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ানো হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং rt-pcr টেস্টের সংখ্যা। পাশাপাশি পুরুলিয়া পৌরসভার ধবকাটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে কোভিড টেস্ট।
এদিকে করোনার রাশ টানতে প্রতিদিন চলছে পুলিশি অভিযানে বিনা মাস্কে রাস্তা এবং বাজারে পুলিশের কাছে ধরা পড়ছেন অনেকেই। দিতে হচ্ছে জরিমানা। আবার মুখে মাস্ক না থাকার কারণে পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর অনেকে পুলিশের সাথে বচসা বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার কারণে ছড়াচ্ছে উত্তেজনা। তবুও করোনার সংক্রমণ রুখতে মরিয়া হয়ে প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
PM Modi's Picture: পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যের আলাদা কোভিড টিকার সংশাপত্র, থাকবে না মোদীর ছবি
Sex Racket: 'দম্পতি ভাগাভাগি'র অভিযোগ গৃহবধূর, তদন্তে নেমে বড় যৌন চক্রের সন্ধান পুলিশের
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, সিভিল পুলিশ এবং পুরুলিয়া পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চলছে। অভিযানের ফলে অনেকে যারা মাস্ক নিচ্ছিলেন না এবার মাস্ক ব্যাবহারের সংখ্যা বেড়েছে। অনেকেই মাস্ক ব্যাবহার করছেন। হাতুয়াড়া হাসপাতলে কোভিডের জন্য ৫৩১টি বেড তৈরি রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সেফ হোমগুলো রেডি করা হয়েছে। জেলায় যদিও এখনও হসপিটালাইজেশন সেরকম হচ্ছে না কিন্তু পুরো বিষয়টিকে নজরে রাখা হয়েছে । যাদের কোভিড হচ্ছে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা খোঁজ নিচ্ছেন।
সব মিলিয়ে বছরের শুরুতেই রাজ্যের প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়ায় করোনার থাবায় বেশ জবু থবু অবস্থা। বছরের প্রথম সপ্তাহ থেকে যেভাবে করোনার সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে গেছে তাতে বেশ চিন্তিত জেলা প্রশাসন। যার জন্য এক প্রকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।