এতদিন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণের খবর দিল যুক্তরাজ্য (United Kingdom)। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন (Boris Johnson) জানিয়েছেন অভূতপূর্ব হারে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অতি দ্রুত মভেল করোনাভাইরাসের ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লেও, এতদিন পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংক্রামিতের গুরুতর অসুস্থতা দেখা যায়নি, বা মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তাই ওমিক্রন, ডেল্টা ভেরিয়েন্টের (Delta Variant) থেকে অনেক বেশি সংক্রামক জেনেও, অনেকেই এই ভাইরাস নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন ছিলেন না। কিন্তু, সোমবার যুক্তরাজ্য (United Kingdom) থেকে প্রথম ওমিক্রন সংক্রামিতের মৃত্যুর খবর জানানো হল। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন (Boris Johnson) নিজেই জানান, 'দুঃখজনকভাবে, অন্তত একজন ওমিক্রন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
রবিবারই বরিস জনসন, করোনার এই নয়া মিউটেশন থেকে সংক্রমণের জোয়ারের আসতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন। এদিন তিনি ওমিক্রন আক্রান্তের মৃত্যুর খবর জানান। পাশাপাশি, এদিন থেকে সেই দেশে করোনাভাইরাস টিকার (Coronavirus Vaccine) বুস্টার ডোজ (Booster Dose) দেওয়া শুরু করা হল। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ এদিন জানিয়েছে, নভেল করোনভাইরাসের ওমিক্রন রূপান্তর 'অভূতপূর্ব হারে' ছড়িয়ে পড়ছে। এখন লন্ডনে প্রায় ৪০ শতাংশ নতুন করোনা সংক্রামিতের দেহেই ওমিক্রণ ভেরিয়েন্ট মিলছে। তাই ব্রিটিশ নাগরিকদের একটি বুস্টার শট নিতে হবে। কারণ টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পরও, সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা পুরোপুরি যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন - Omicron in Kerala: এবার কেরলেও পৌঁছে গেল ওমিক্রন, ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে ভারতের তলিকা
আরও পড়ুন - Omicron Cases Rising: ভারত কি তৃতীয় তরঙ্গের মুখে, কী বলছেন 'হু'-এর বিশেষজ্ঞ
আরও পড়ুন - Omicron Update: মহারাষ্ট্রে ফের ওমিক্রণের হাইজাম্প, সতর্কতা জারি করল স্বাস্থ্য মন্ত্রক
গত ২৭ নভেম্বর যুক্তরাজ্যে প্রথম ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা সনাক্ত করা হয়েছিল। সেই দেশের স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন, বর্তমানে অভূতপূর্ব হারে ব্রিটেনে এই নয়া ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতি দুই থেকে তিন দিনে সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। এরকমটা মহামারির শুরু থেকে কখনও দেখা যায়নি। ডেল্টা সংক্রমণের সময়ও নয়। তিনি আরও বলেছেন, ফের ভ্যাকসিন এবং ভাইরাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ডে ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই অবস্থায় বরিস জনসন আরও কঠোর কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ আরোপ করতে চাইছেন। প্রয়োজনে ফের লকডাউনের পথেও হাঁটা হতে পারে। ব্যবস্থা না নিলে চলতি মাসের শেষেই অন্তত ১০ লক্ষ ব্রিটিশ নাগরিক ওমিক্রনে সংক্রামিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ জনিত কারণে মোট ১,৪৬,০০০ এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকে মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছেন জনসন। শুরুতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল লকডাউন না করার। রোগীদের কেয়ার হোমে স্থানান্তরিত করার ক্ষেত্রে প্রচুর ভুলভ্রান্তি, কোভিড-১৯ পরীক্ষা ব্যয়বহুল এবং যোগাযোগের অনুসন্ধানের জন্য একটি সুসংহত পদ্ধতি গড়ে না তুলতে পারার মতো কাজে তাঁর ব্যর্থতা ধরা পড়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। আবার দ্বিতীয় তরঙ্গের সময়, কঠোর বিধিনিষেধ জারির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা হয়েছিল তাঁর নিজের দলের ভিতরেই। এখন জনসন ওমিক্রনের বিস্তার রোধ করার চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গে, তিনি ফের কঠোর কোভিড বিধি নিষেধ জারি এবং তার ফলে তাঁর জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার জন্য, ফের তাঁর দলের লিবার্টিয়ানদের ক্রমবর্ধমান ক্রোধের মুখোমুখি হচ্ছেন।