করোনাভাইরাস সঙ্কটে গোটা বিশ্বের মানুষ এক হয়ে লড়ার শপথ নিচ্ছে
এই সময়ও সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ উঠল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে
করোনাভাইরাস হিন্দু-মুসলিম না দেখলেও ইমরান প্রশাসন এখনও তাই দেখছে
চরম অমানবিকতার শিকার হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা
করোনাভাইরাস সঙ্কট গোটা বিশ্বের মানুষকে এক নৌকায় এনে দিয়েছে। প্রত্যেকে এক হয়ে সাধারণ শত্রু কোভিড-১৯'এর বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়ার শপথ নিচ্ছেন। কিন্তু, এই মানবতার চরম পরীক্ষার সময়েও ইমরান খানের 'নয়া পাকিস্তান'-এ প্রকাশ্যেই সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ সেই দেশের হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখদের মতো সংখ্যালঘুদের সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে এই বিপর্যয়ের মধ্যেও বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। সংকটের সময় মৌলিক প্রয়োজনীয়তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের এক সংখ্যালঘু হিন্দু অভিযোগ করেছেন, করোনভাইরাস বৈষম্য করছেন না। রোগ ছডজ়ানোর সময়ে দেখছে না সেই ব্যক্তি হিন্দু না মুসলমান। কিন্তু, করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই করছে ইমরান খান প্রশাসন।
ওই পাক হিন্দু বলেছেন, 'আমরাও পাকিস্তানি। তাই সরকারে উচিত আমাদেরও যত্ন নেওয়া। মুসলমানদের প্রশাসন যেভাবে সহযোগিতা করছে, সেই সহযোগিতা আমাদেরও পাওয়া উচিত। আমাদেরও ঘরে ছোট ছোট বাচ্চা আছে। আমরা দরিদ্র মানুষ। কিন্তু খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা মুসলমানদের দেওয়া হচ্ছে, আমাদের নয়। কেউ আমাদের সহযোগিতা করছে না। এটা অত্যন্ত ভুল কাজ হচ্ছে'।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তানে মোট করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১ এপ্রিল-এ ২০৭১-এ পৌঁছেছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত পঞ্জাব ও সিন্ধ প্রদেশেই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যথাক্রমে 8০৮ এবং ৬৭৬। পাক অধিকৃত কাশ্মীর অর্থাৎ পিওকে-তেও ছয়জন কোভিড-১৯ আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এছাড়া বালুচিস্তানে ১৫৮ জন, গিলগিত বাল্টিস্তানে ১৮৪ জন , ইসলামাবাদে ৫৪ জন এবং খাইবার পাখতুনখোয়াতে ২৫৩ জন করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটননা রয়েছে। পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত এই রোগে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সঙ্কট মোকাবিলায় ইমরান খান একটি জাতীয় কমান্ড কেন্দ্র গঠন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ভারতের সিএএ আইনকে আক্রমণ করে এর আগে ইমরান খান দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সংখ্যাগুরুতেদ সমান আচরণ করা হয়। ভারতের আইনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারের শিকার হয়ে আগত অমুসলিম উদ্বাস্তুদের সহজে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এই আিন পাস হওয়ার পরই ইমরান খান রাষ্টচ্রসংঘ থেকে শুরু করে একের পর এক আন্তর্জাতিক সংগঠনে ভারতের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের দাবি তুলেছিলেন। তবে বাস্তব ছবিটা হল, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনই পাকিস্তানে হিন্দু, খ্রিস্টান এমনকী মূল ধারার বাইরে তাকা মুসলিমদের উপরেও নৃশংস আচরণ চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিপর্যয়ের সময়েও ছবিটা একটুও বদলালো না।