অ্যান্টি করোনাভাইরাস সংস্থা জানিয়েছে করাচির এক মহিলা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। ৫৭ বছর বয়েসী ওই মহিলা ভ্যাকসিনের কোনও ডোজই নেননি।
সোমবার ওমিক্রনের(Omicron) প্রথম থাবা ছাপ রাখল পাকিস্তানে(Pakistan)। সেদেশের অ্যান্টি করোনাভাইরাস সংস্থা (Anti Corona Virus agency) জানিয়েছে করাচির এক মহিলা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন(Karachi woman infected)। ৫৭ বছর বয়েসী ওই মহিলা ভ্যাকসিনের কোনও ডোজই নেননি। এই তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল কমান্ড অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার। ইসলামাবাদের এনসিওসি জানিয়েছে ৮ই ডিসেম্বর সিন্ধ প্রদেশ সরকার দাবি করেছে জিনোমিক স্টাডির মাধ্যমে এই পরীক্ষা করা হয়।
দ্রুত এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। সিন্ধ প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজরা পেচুহো জানিয়েছেন ওই মহিলা কোনও ভ্যাকসিন নেননি। গত মাসে, পরিকল্পনা মন্ত্রী আসাদ উমর সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের পাকিস্তানে আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এনসিওসি ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের প্রেক্ষিতে ভ্রমণের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আটটি দেশ থেকে যাত্রীদের আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরে সেই সংখ্যা ১৫ হয়েছে। তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, ইউক্রেন, স্লোভেনিয়া, ভিয়েতনাম, পোল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, মোজাম্বিক, লেসোথো, এসওয়াতিনি, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনে (Omicron) বেশি আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। প্রথম সংক্রমণের ৯০ দিন পরে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তিনগুণ বেশি। ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রভাবশালী স্ট্রেন, এবং এই ভেরিয়েন্টেরর সংক্রমণযোগ্যতা সম্পর্কে যথেষ্ট ডেটা পেতে সময় লাগবে। হু জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে সে দেশে আরও বেশি শিশু এই স্ট্রেনে আক্রান্ত হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা করোনা পরীক্ষার হার বাড়িয়েছে। ফলে আরও বেশি সংখ্যায় আক্রান্তের খোঁজ মিলছে।
হু উল্লেখ করেছে যে অনেকগুলি কোভিড -১৯ টিকা শিশুদের জন্য তৈরি হয়নি বা পাওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র কয়েকটি দেশ শিশুদের টিকা দিচ্ছে। শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের অনুপস্থিতি কোভিড - ১৯ সংক্রমণের বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে। ব্রিটেনের ওয়েলকাম ট্রাস্টের প্রাক্তন সায়েন্টেফিক অ্যাডভাইসর ও ডিরেক্টর জেরেমি ফারার জানাচ্ছেন মনে করা হয়েছিল করোনা মহামারী হয়ত শেষের পথে। কিন্তু নিত্য নতুন ভেরিয়েন্ট প্রমাণ করেছে মানুষের এই ধারণা ভুল প্রমাণ করছে ওমিক্রনের মতো করোনার ভেরিয়ান্ট।
এই বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন ভ্যাকসিনের সীমিত ব্যবহার বিশ্ব জুড়ে করোনা সংক্রমণকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। মানুষকে আরও সতর্ক হতে হবে। কারণ করোনার এক একটি ভেরিয়েন্ট এক এক রকমের উপসর্গ নিয়ে আসছে। তবে করোনা ভ্যাকসিন এই ভেরিয়েন্টগুলি থেকে যে পুরোপুরি রক্ষা করতে পারবে, এমন কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়ে ছিল একই কথা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ আরও জানিয়ে ছিলেন, ভাইরাসটির নতুন নতুন রূপের সূচনা হচ্ছে। গোটা ইউরোপ শীতের মরশুমে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে। তাতে দেশগুলি অনেকটাই সফল হয়েছে। নিরাপজ ও কার্যকর ভ্যাকসিনও হাতে রয়েছে। কোভিড মোকাবিলায় নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থারও সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু ভ্যাকসিনের বৈষম্য সবকিছুই বদলে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন তিনি। সাবধানতা আর টিকাকরণেই পারে কোভিড মহামারির হাত থেকে দ্রুত নিষ্কৃতি দিতে বলে জানিয়েছিল হু।