সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং জন রাইট। ফের দেখা গেল ভারতের একসময়কার প্রখ্যাত অধিনায়ক-কোচ জুটিকে। মঙ্গলবার ভারত ও বাংলাদেশ নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্য়াচ খেলছে। আর সেই ম্যাচেই ধারাভাষ্য দিতে কমেন্ট্রি বক্সে একসঙ্গে বসলেন সৌরভ ও জন রাইট। আর মুহূর্তে ভারতীয় দর্শকদের একাংশ স্মৃতি সরণি বেয়ে পিছিয়ে গেলেন ১৬টা বছর।
তবে এই কোচ-অধিনায়ক জুটির কথা উঠলেই ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের বুক থেকে একরাশ হতাশা উঠে আসে। ২০১১ সালে নিজেদের দেশে চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০৩ সালে ফাইনালে উঠেও পরাজয়ের হতাশা কাটেনি অনেক ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকের। এদিন আরও একবার সেই নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হলেন ক্রিকেট ভক্তরা।
সৌরভ, জন রাইটের আলোচনায় সেই বছরের বিশ্বকাপের অনেক নেপথ্য কাহিনী, ড্রেসিংরুমের মজার গল্প উঠে এল। যেমন সেই সময়ে দলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে ছিল এই নিয়েও মজা করলেন প্রাক্তন দুই সহকর্মী। দাদা দাবি করলেন অধিনায়ক হিসেবে তিনি একেবারে বাধ্য ছাত্র ছিলেন। তিনি বলেন, 'যখন আমি অধিনায়ক ছিলাম, তখন কোচ হিসেবে জন রাইট সব সিদ্ধান্ত নিতেন। আর বাধ্য ছাত্রের মতো আমি তা অনুসরণ করতাম।'
সত্যিই কি তাই? মাঠে যে দাপুটে অধিনায়ককে দেখা যেত, যিনি ভারতকে প্রথম শিখিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে, তিনি কী ড্রেসিংরুমে এতটাই নিরিহ ছিলেন? তাঁর সেইসময়ের কোচ কিন্তু তা বলছেন না।
কিউই প্রাক্তন ক্রিকেটারের সৌরভের ওই কথায় জবাবে বলেন, 'আমার বোধহয় স্মৃতিভ্রম হচ্ছে। কারণ, আমার যতদূর মনে পড়ে, তুমিই সব দায়িত্বে ছিলে। আর আমি পিছনে ঘুরেফিরে বেড়াতাম।'
আরও নানান মজায় সময়টা কাটিয়েছেন ২০০৩ সালের ভারতের বিশ্বকাপে রানারআপ হওয়া দলের অধিনায়ক ও কোচ। এমনকী দুজনের মধ্যে কথা হয় ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের আগে ভারতের প্রস্তুতি ম্য়াচের স্কোর নিয়েও। এরপর অধিনায়ক তাঁর কোচকে 'ফ্লস ডান্স' করে দেখাতে অনুরোধ করেন।
কাঁধে ব্যাকপ্য়াক নিয়ে সমানে হাত দুলিয়ে নাচতে হয় ফ্লস ডান্স। তখনকার ভারতীয় দলের জাতীয় কোচ নাকি ড্রেসিংরুমে এই নাচকে দারুণভাবে ব্যবহার করতেন। কিন্তু কী কাজে 'ফ্লস ডান্স' করতেন রাইট তা অবশ্য রহ্যই রেখে দিয়েছেন সৌরভ।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায় ও জন রাইটের অধিনায়ক-কোচের জুটির পথচলা শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। চলেছিল ২০১৫ সাল অবধি। ২০০০ সালে ক্রিকেট গড়াপেটায় বিধ্বস্ত হয় ভারতীয় ক্রিকেট। জনতাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সেই জায়গা থেকে ধীরে ধীরে এই দুই ব্যক্তি ভারতীয় ক্রিকেটের পুনরুত্থানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল। এই জুটির হাত ধরেই ভারত প্রথম বিদেশে টেস্ট জিততে শিখেছিল। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের শুরুটা কিন্তু ভারতের পক্ষে খুব খারাপ হয়েছিল। কিন্তু, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ফাইনাল অবধি পৌঁছে গিয়েছিল। তবে তাদের দৌড় আটকেছিল প্রবল শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার সামনে।