কালিকা পুরাণ অনুযায়ী রাম রাবণের যুদ্ধের সময় রামচন্দ্র অকাল বোধন করেছিলেন। কৃত্তিবাস ওঝা রামায়ণে লিখেছেন রাম স্বয়ং দুর্গার বোঝন আর পুজো করেছিলেন।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো (Durga Puja)। বছরের এই পাঁচটি দিন শুধুই আনন্দ আর সম্প্রতির। প্রাচীনকালে দূর্গাপুজো শুধুমাত্র অবস্থাপন্ন বা জমিদারবাড়িগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পরবর্তীকাল মূলত ব্রিটিশ শাসনের সময় দুর্গাপুজো সার্বজনীন হয়। সেই সময় থেকেই দুর্গাপুজো উৎসবের চেহারা পেতে শুরু করে। পুরাণেও দুর্গাপুজোর উল্লেখ রয়েছে।
কালিকা পুরাণ অনুযায়ী রাম রাবণের যুদ্ধের সময় রামচন্দ্র অকাল বোধন করেছিলেন। কৃত্তিবাস ওঝা রামায়ণে লিখেছেন রাম স্বয়ং দুর্গার বোঝন আর পুজো করেছিলেন। তবে রামায়ণের রচয়িতা বাল্মিকীমুনি লেখায় রামের দুর্গাপুজো করার কোনও উল্লেখ নেই।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুযায়ী কৃষ্ণই প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। বৃন্দাবনের মহারাসমণ্ডলে প্রথম দুর্গাপুজো করেছিলেন কৃষ্ণ। দেবীভগবত পুরাণ অনুযায়ী ব্রহ্মার মানসপুত্র মনু দুর্গাপুজো করেছিলেন। তিনি ক্ষীরোদসাগরের তীরে মাাটির দুর্গা তৈরি করে তা পুজো করেন। দেবী দর্শনের জন্য তিনি কঠোর তপস্যাও করেছিলেন। মার্কণ্ডেয় পুরাণে আবার দুর্গাকে দেবী চণ্ডীরূপে বর্ণনা করা হয়েছে।
লোকগাথা অনুযায়ী বাংলায় দূর্গাপুজো শুরু হয়েছিল ১৫০০ শতকের শেষের দিকে। দিনাজপুর-মালদার জমিদার স্পপ্নাদেশে পুজো সুরু করেছিলেন। অন্য একটি তথ্য বলছে তাহেরপুরের রাজা কংশনারায়ণ যিনি বারো ভুইয়ার একজন তিনি প্রথম শরৎকালে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। তথ্য অনুযায়ী এই সময় জমিদার বাড়িতে পুজো করার উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের প্রজাবৎসল রূপ তুলে ধরা। কারণ এই সময়টাতে চাষের কাজ তেমন থাকে না। তাই প্রজারা অনেকটাই অবসরে কাটায়। তাদের পুজোর অনুষ্ঠানে সামিল করার উদ্দেশ্য নিয়েই পুজো শুরু হয়েছিল। যদিও পুজোর অনুষ্ঠানে থেকে তাদের কিছুটা দূরে রাখা হত।
৯-এর দশকের স্মৃতি ফিরিয়ে আনল রেল, নতুন ভাবে দেখুন 'মিলে সুর মেরা তুমহারা' গানটি
তথ্য অনুযায়ী বারোয়ারি দুর্গাপুজোর সূচনা ১৭৯০ সালে গুপ্তপাড়ায়। সেখানে ১২ জন মূল উদ্যোগ গ্রহণ করে পুজো শুরু করেছিলে। অনেক অনেক পরে কলকাতাতে ১৯১০ সালে প্রথম বারোয়ারি দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল। তারপর তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলায়। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। সুভাষচন্দ্র বসুও যুক্ত ছিলেন সার্বজনীন পুজোয়। স্বামী বিবেকানন্দর উদ্যোগে বেলুড়মঠে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল। ভারত সেবাশ্রম সংঘেও শুরু করেছিল দূর্গাপুজো।
ব্যবসা থেকে চাকরির সুবর্ণ সুযোগ, বিশ্বের এই দেশগুলিতে ভ্রণের সঙ্গে পাওয়া যাবে অর্থও
বর্তমানে দুর্গাপুজো শুধু বাংলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। দেশের সীমানা অতিক্রম করে তা ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। একটা সময় দুর্গা পুজো নেপাল বাংলাদেশে হত। কিন্তু এখন ইংল্যান্ড আর আমেরিকাসহ একাধিক দেশে এই সময় দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়।