প্রবাসের পুজো হলেও সেখানে নিয়ম নিষ্ঠার কোনও খামতি থাকে না। আর পুজোর কয়েকটা দিন ওই পুজোগুলিতে ভিড় জমান ওই শহরের বিভন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালিরা। এভাবেই সেই শহরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক দুর্গাপুজো। তার মধ্যে দেখে নেওয়া যাক সেরা পাঁচটি দুর্গাপুজো।
বাঙালি (Bengali) যেখানে থাকবে সেখানে দুর্গাপুজো (Durga Puja) হবে না এটা কখনও হয় না। কর্মসূত্রে কলকাতা (Kolkata) থেকে দূরে থাকতে হয় অনেককেই। কিন্তু, উৎসবের দিনগুলিতে তাঁদের মন পড়ে থাকে সেই নিজের রাজ্যেই। কিন্তু, কাজ ফেলে কয়েকদিনের জন্য অনেকেরই বাড়িতে ফেরা সম্ভব হয় না। তাই প্রবাসে থেকেই নিজেদের মতো করে পুজোর আয়োজন করেন অনেকেই। পুজোর কটাদিন প্রবাসে আয়োজিত সেই পুজোতেই গা ভাসাতে দেখা যায় তাঁদের। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে প্রায় সব রাজ্যেই দুর্গাপুজো হয়। বেশিরভাগ বাঙালি কলোনিতেই পুজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। হায়দরাবাদেও প্রতি বছর নিয়ম করে পুজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রবাসের পুজো হলেও সেখানে নিয়ম নিষ্ঠার কোনও খামতি থাকে না। আর পুজোর কয়েকটা দিন ওই পুজোগুলিতে ভিড় জমান ওই শহরের বিভন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালিরা। এভাবেই সেই শহরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক দুর্গাপুজো। তার মধ্যে দেখে নেওয়া যাক সেরা পাঁচটি দুর্গাপুজো।
হায়দরাবাদ বাঙালি সমিতির পুজো (Hyderabad Bangalee Samity)। এই পুজো হায়দরাবাদের সব থেকে প্রাচীন দুর্গাপুজো। ১৯৪২-এ অর্থাত্ স্বাধীনতার পাঁচ বছর আগে এই পুজো যাত্রা শুরু করেছিল। হায়দরাবাদের ওয়াইএমসিএতে একটি বৈঠকের মাধ্যমে এই পুজোর যাত্রা শুরু। মণ্ডপের সাজসজ্জায় বিশেষ কোনও জাঁকজমক থাকে না এখানে। রামকৃষ্ণ মঠ মার্গের পিভিআর কনভেনশন সেন্টারে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। তবে পুজোতে তেমন জাঁকজমক না থাকলেও অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনও ত্রুটি রাখা হয় না। সেখানে পুজোর পাঁচটি দিনের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর তার সঙ্গে থাকে যাবতীয় বাঙালি খাবারের স্টল।
বাঙালি থাকলে সেখানে কালীবাড়ি (Kalibari Temple) থাকবে না এটা কখনও হয় না। হায়দরাবাদেও রয়েছে কালীবাড়ি। বিবেকানন্দপুরী অঞ্চলে এই মন্দির যেন এক টুকরো বাংলা। বাঙালিদের সব পুজোর মতোই দুর্গাপুজোও এই মন্দিরে ধুমধাম করে পালন করা হয়ে থাকে। এই মন্দিরে ভোগ খাওয়ার সুযোগও থাকে। যদি হায়দরাবাদে থাকা কোনও বাঙালি মনে করেন অষ্টমীর দিন ভোগ খাবেন তাহলে অনায়াসেই এখানে চলে যেতে পারেন। এছাড়া মন্দিরের বাইরের দিকে থাকে বাঙালি খাবারের স্টলও।
হায়দরাবাদের অন্যতম প্রাচীন পুজো হল কিজ হাইস্কুলের পুজো (Bangiya Sanskritik Sangha)। এই পুজো বেশ বড় করে আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেকেন্দ্রাবাদের কিজ গার্লস হাইস্কুলের মাঠে এই পুজো হয়। পুজোর পাশাপাশি থাকে খাবারের স্টল। এমন কোনও বাঙালি খাবার নেই যা সেখানে পাওয়া যায় না। ইলিশ মাছ থেকে শুরু করে আলু পোস্ত সব ধরনের খাবার পাওয়া যায় এখানে। আর বাঙালি যেখানে থাকবে সেখানে খাবার থাকবে না এটা কখনও হয়! এছাড়া পুজোর পাঁচটি দিন এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়। বাংলা থেকে বহু শিল্পীকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
মিয়াপুরের নরেন গার্ডেন্সের পুজো (Cyberabad Bengali Association)। ২০০৭-এ এই পুজোর সূচনা করেন কর্মসূত্রে হায়দরাবাদে যাওয়া তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী এবং তাঁদের পরিবাররা। উদ্যোক্তাদের মূল উদ্দেশ্য, পুজোর পাঁচ দিন এক টুকরো বাংলাকে নিয়ে আসা। পুজার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও মেতে থাকেন সবাই।
হায়দরাবাদের বড় পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম উৎসব কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপুজো (Utsab Cultural Association)। চলতি বছর নবম বর্ষে পা দিয়েছে এই পুজো। আর এই পুজোর সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছেন একাধিক বাঙালি। পুজোর কটাদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সেখানেও একাধিক খাবারের স্টলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ গিয়ে সেই পুজোয় ভিড় জমান।