এত উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গ অনেক দিন দেখেনি। বারবার ফিরে আসছে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কথা। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যে ঘটে গিয়েছে বড়সড় রদবদল। তবে নৈরাজ্যের এই সংস্কৃতিকে, বাংলা ভাষার মেরুদণ্ড বিদ্যাসাগরের এ হেন লাঞ্ছনাকে খুব ভাল ভাবে নেয়নি বাঙালি জাতি, ছিছিক্কার বুদ্ধিজীবীরা। এবার কলম ধরলেন মমতাও।
হ্যাঁ, বিদ্যাসাগরের সমর্থনে এবার গর্জে উঠল তার কলম। চোখ রাখা যাক মমতার কবিতায়ঃ
ভাঙতে শিখেছ
গড়তে শেখনি
ভাঙাই তোমাদের কাজ
ভাঙতে গেলে থামতে হবে
ছিঃ ছিঃ নেইকো লাজ
হাত-পা ভাঙলে জোড়া লাগে
হৃদয় ভাঙলে জোড়ে না
মায়ের জীবন শেষ হলেও
মা কখনো হারায় না। ঐতিহ্য নিয়ে খেলছো খেলা
বাংলাকে নিয়ে খেলো না,
সংস্কৃতির জাগরণ বাংলার মুক্তি
এত অবজ্ঞা কর না।
তোমাদের আছে অর্থের জোর
আর আমাদের প্রাণ-ভরা শ্রদ্ধা
বিদ্যার সাগর, আমি লজ্জিত
ক্ষমা চাওয়ার নেই স্পর্ধা!!!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা কোনও নতুন বিষয় নয়। তাঁর রচিত ছড়ার বই কথাঞ্জলির বাজার কাটতি ভাল। অতীতেও নানা সময়ে মমতা বিরোধীদের জবাব দিয়েছেন কবিতায় গানে।
এনআরসি এর বিরুদ্ধেও তিনি শব্দে শব্দে জো়ড় বাঁধিয়ে কবিতার জন্ম দিয়েছিলেন। কবিতার নাম ছিল 'পরিচয়'। এইকবিতায় মমতা ছুঁয়ে গিয়েছিলেন 'মন কি বাত', থেকে 'আধার'-এর মত সমসাময়িক প্রসঙ্গগুলি। মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন রাজনৈতিক দলের বিরোধী হলেই দেশবিরোধী তকমা দেওয়া হবে?
এবার সেই তালিকায় নবতম সংযোজন এই কবিতা , 'লজ্জিত'। দেশে চলছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। শেষ দফার আগে যাবতীয় ভোক্যাল টনিক আপাতত বন্ধ। সৌজন্যে কমিশনের জারি করা ৩২৪। কিন্তু তা বলে কি কবির কলম থেমে থাকে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কবিতাও ভাইরাল হতে শুরু করেছে। কে বলতে পারে ১৯ মনে ভোটবাক্সে হয়ত আছড়ে পড়ল 'কবির অভিশাপ'।