দলীয় স্তরে জোড়া বৈঠকের পরে এবারে প্রশাসনিক দিকেও নজর দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি কাজে গতি আনতে এবার দলের সমস্ত বিধায়ক এবং মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী সোমবার নবান্নে এই বৈঠক হওয়ার কথা।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য সরকারের উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই মাঠে নেমেছিল তৃণমূল। বাস্তবে দেখা গিয়েছে, গোটা রাজ্যেই জনসমর্থন হারিয়েছে শাসক দল। উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের জনসমর্থনে বড়সড় ধস নেমেছে। একই অবস্থা জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতেও। আর মানুষের এই ক্ষোভের সুযোগ নিয়েই বাড়ছে বিজেপি।
ভোটের ফল প্রকাশের পরেই কালীঘাটের বাড়িতে জেলা এবং রাজ্যস্তরের নেতাদের ডেকে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন মমতা। শুক্রবারই কোর কমিটির মিটিংও করেছেন তিনি। কিন্তু সাংগঠনিক দিকের পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তরেও যে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন, তা ভালই জানেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প এবং কাজের অগ্রগতির খতিয়ান নিতেই তিনি বিধায়ক এবং মন্ত্রী ডেকে পাঠিয়েছেন বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
ভোটের ফল প্রকাশের পরেই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধের জন্য ছ' মাসেরও বেশি সময় ধরে সরকারি সমস্ত কাজ প্রায় বন্ধ। ফলে, সাধারণ মানুষকে ঠিক মতো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। দলের কোর কমিটির বৈঠকে নেতাদের আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনোর পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। কিন্তু যাঁর জনপ্রতিনিধি, সেই বিধায়ক এবং মন্ত্রীরা নিজেদের কাজ ঠিক মতো করছেন কি না, সম্ভবত সেটাই দেখে নিতে চাইছেন মমতা। পরিষেবা ঠিক মতো পেলে মানুষ কেন মুখ ফিরিয়ে নেবে সে প্রশ্ন উঠছেই। ফলে সরকারি সব প্রকল্পের সুবিধে যাতে মানুষের কাছে পৌঁছয়, সোমবারের বৈঠকে বিধায়ক, মন্ত্রীদের সেই নির্দেশি দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের সঙ্গে যাতে মানুষের দূরত্ব না বাড়ে, তাও মনে করিয়ে দিতে পারেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী ভাল মতোই জানেন, বিজেপি-র পাখির চোখে এখন ২০২১-এ তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা। তাই সংগঠনের মতোই এখন থেকে সরকারের রাশও শক্ত হাতে না ধরলে যে বিপদ আসন্ন, তা মমতার থেকে ভাল আর কেউ জানেন না।