উত্তমের সময়েও রবি ঘোষ 'একাই একশো', মৃত্যুবার্ষিকীতে ফিরে দেখা বাংলা সিনেমার কিংবদন্তিকে

কিংবদন্তীর কখনও মৃত্যু হয় না, তারা চলে যান ঠিকই, কিন্তু চলে গিয়েই যেন একটা ছাপ রেখে যান দর্শকমনে। ঠিক তেমনই একজন অভিনেতা হলেন রবি ঘোষ। অভিনেতার থেকে কৌতুকাভিনেতা হিসেবে  সকলের কাছে পরিচিত রবি ঘোষ।

চলচ্চিত্র ছাড়াও বাংলা নাট্যমঞ্চ, টেলিভিশন তথা ছোটপর্দায় অভিনয় করেছেন  রবি ঘোষ। বিভিন্ন ধরনের চরিত্র নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন রবি ঘোষ। তার অভিনয় নিতে নতুন করে বলার কিছুই নেই। বরং তার অভিনয়ের প্রশংসা করেননি এমন লোকের সংখ্যা মনে হয় বিরল।

বিখ্যাত অভিনেতা উৎপল দত্তের সঙ্গে নাটক করতেন রবি ঘোষ। অঙ্গার নাটকে তার অভিনয় দেখার পর পরিচালক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় প্রথম তাকে চলচ্চিত্রে সুযোগ দেন। ১৯৫৯ সালে 'আহ্বান' ছবিতে ছোট্ট একটি ভূমিকায় অভিনয় করেন। 
 

অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের প্রথম ছবির পর  তপন সিংহের পর ‘গল্প হলেও সত্যি’ ছবিতে সকলের নজর কাড়েন  রবি ঘোষ। এবং তারপর ১৯৬৮ সালে সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী ছবি গুপী গাইন বাঘা বাইন -এর ছবিতে বাঘার চরিত্রে অভিনয় তার চলচ্চিত্র কেরিয়ারের মাইলফলক। এই ছবি দিয়েই কৌতুকাভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হন রবি ঘোষ। 

 উত্তম- সৌমিত্রদের সময়ে স্টিরিওটাইপ তকমা ভাঙতে পেরেছিলেন রবি ঘোষ। যিনি সিনেমার ভাষ্যে  নিয়ে এসেছিলেন এক অন্য হাওয়া। যেখানে গা ভাসানো যায় সহজেই এবং যার রেশ থাকে বহু বছর। তবে তাকে ধরা ভীষণ কঠিন।

তখনকার সময়েই বডিবিল্ডার হতে চাওয়া খাঁটো গায়ের রং কালো লোকটাই মিনার্ভা থিয়েটার একাই হাউসফুল করে দিতেন।  সকলের মুখে একটাই বুলি ছিল-রবি ঘোষ একাই একশো। হাস্যরসের মাধ্যমে সামাজিক রূঢ় বাস্তব ঘটনাকে সাবলিল ভাবে উপস্থাপনায় ছিল তার মূল লক্ষ্য।
 

 ' গল্প হলেও সত্যি' ,' গুপী গাইন বাঘা বাইন', 'অভিযান, অরণ্যের দিনরাত্রি',' হীরক রাজার দেশে', 'পদ্মানদীর মাঝি', 'বসন্ত বিলাপ', 'কাপুরুষ ও মহাপুরুষ'-এরকম একাধিক ছবিতে  তার অভিনয় দর্শকমনে ছাপ রেখেছে।  

অভিনয়ের পাশপাশি পরিচালনাতেও পটু ছিলেন রবি ঘোষ। ১৯৯৭ সালে ৪ ঠা  ফেব্রুয়ারি মৃত্য হয় রবি ঘোষের, যা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বড় ক্ষতি। শুধু ভারত নয় বরং বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দস্তিদার ওরফে রবি ঘোষ ।