ছোট পর্দায় তিনি এখন মা মনসা নামেই পরিচিত। কারণ সদ্য সমাপ্ত হওয়া এই ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনেত্রীর নাম চাঁদনি সাহা। মেগা দিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা। কেরিয়ার থেকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপটে কথা বললেন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার প্রতিনিধি পিয়ালী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
প্রশ্ন- মনসা তো পৌরাণিক চরিত্র, এর আগে কী কোনও পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় করেছ?
চাঁদনি- না এটাই আমার প্রথম পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় করা। আমি আগে ভাবতাম আমি মাইথোলজিক্যাল চরিত্রে হয়ত অভিনয় করতে পারব না। পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় আর পাঁচটা চরিত্রের মতো নয়। দেবতাদের কথা-বার্তা থেকে হাঁটাচলা সবটাই অনেকটা আলাদা হয়। শুধু তাই নয় পোষাক-আশাক ও অন্যরকমের হয়।
প্রশ্ন- কেমন অভিজ্ঞতা মনসার মতো পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় নিয়ে?
চাঁদনি- খুবই ভালো। আমার মতে প্রত্যেকটা মানুষেরই একবার করে জীবনে পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় করা উচিত। অনেক কিছু শিখেছি এই চরিত্রটা করতে গিয়ে। কখনোই বোর হয়নি। এই চরিত্রটা করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি, অনেক শব্দ জেনেছি। এটা আমি অস্বীকার করতে পারি না। তবে খারাপ লাগে, মনসা শেষ হওয়ায়। আগে শ্যুটিং শেষ হয়ে গেলেই বাড়ি চলে আসতাম। তবে পরে যখন জানতে পারি এটা শেষের পথে, তখন থেকে বেশ কিছুটা সময় সবার সঙ্গে বসে গল্প করে তারপর ফিরে আসতাম। আমরা একটা পরিবার হয়ে গিয়েছিলাম সিরিয়ালটা করতে করতে, সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক খুব ভালো। সবাইকে খুব মিস করছি।
প্রশ্ন- পর্দার মনসা আর পর্দার বাইরে চাঁদনির মধ্যে কোনও মিল বা পার্থক্য রয়েছে?
চাঁদনি- যদি বলো মনসার সঙ্গে মিল, তাহলে বলব মিল আছে। খুব রাগী নই। কিন্তু আমি অন্যায় একদম সহ্য করতে পারি না। প্রতিবাদ করি। এতদিন হয়ত মনসাকে সবাই নেগেটিভ চরিত্র বলে জানত, তবে এরপর আর কেউ হয়ত সেটা মনে করবেন না।
প্রশ্ন- মনসা করার পর তোমার ভক্তরা কি বলছে?
চাঁদনি- মনসার ফিডব্যাক খুবই ভালো। সবাই এতদিন ধরে শো-টাকে ভালোবেসেছে বলেই এটা চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করলে দর্শকরা কেউ কেউ কমেন্টও করেছেন মা একটু দেখবেন, আশীর্বাদ বাদ করুন। এগুলো খুবই ভালো লাগে, এনজয় করি।
প্রশ্ন- এই মূহুর্তে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলেবদের নিয়ে ট্রোলিং-এর প্রায় কমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তুমি কি সেরকম ট্রোলের মুখে পড়েছ?
চাঁদনি- মাসখানেক আগে দেখেছিলাম, আমাদের এই সিরিয়ালটা নিয়েই। আমার ছবি, তার নীচে লেখা কালকূট বিশেষজ্ঞ, ঝাঁড়ফুক করে দেবেন। আামি আসলে এই বিষয়গুলোতে খুব একটা পাত্তা দিইনা। নিশ্চয় ট্রোলড হওয়ার মতো কোনও একটা জায়গাতে পৌঁছেছি, তাই ট্রোল হচ্ছে। নিজে ভালো থাকার জন্য পজিটিভ দিকটা খুঁজে নিতে হয়।
প্রশ্ন- এই বছর পুজোর কি প্ল্যান?
চাঁদনি- সেরকম বিশেষ কিছু প্ল্যান নেই। ঘুরতে যাওয়ারও কোনও প্ল্যান নেই। কলকাতাতেই থাকি। আসলে দুর্গাপুজোর সময়ে আমি আমার জীবনের প্রিয় মানুষটাকে হারিয়েছি। ২০১০ সালে নবমীর দিন বাবাকে হারিয়েছি। নিজের মত বাড়িতেই থাকি। ছোটবেলার মত ওই উত্তেজনাটা আর নেই। কালিপুজোতে খুব মজা করি।
প্রশ্ন- বাইরে বেরোলে ফ্যান-ফলোয়ার্স-এর প্রতিক্রিয়া কিরকম?
চাঁদনি- হ্যাঁ, রাস্তায় বের হলে লোকজন চিনতে পারে, তবে কলকাতায় তো সবসময় সেই উত্তেজনাটা থাকে না। গ্রামের দিকে শো করতে গেলে সেটা হয়। পৌরাণিক চরিত্র করতে গেলে তো অনেক সাজগোজ থাকে। আর এমনিতে আমি রাস্তায় বেরোলে চশমা পরে বের হই, তাও লোকজন চিনতে পারে। এটার জন্য আমি বেশ খুশি।