পশ্চিমবঙ্গে গেরুয়া শিবির অর্থাৎ বিজেপি ক্রমে ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। কিন্তু গেরুয়া ঝড় শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, উঠছে বাংলাদেশেও। না, বাংলাদেশে বিজেপি শিবিরের উত্থান ঘটছে না। আসলে এই গেরুয়া ঝড় দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশীদের দাড়িতে। অবস্থা এমনই যে বলা হচ্ছে সেই দেশে কোনও রাস্তায় হাঁটলে গেরুয়া বা কমলা রঙের দাড়ি চোখে পড়বেই। বাংলাদেশে এই গেরুয়া দাড়ির প্রবণতা বাড়ার পিছনে কিন্তু একটি নয়, বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।
বুড়ো থেকে জোয়ান - সংবাদ সংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী বাংলাদেশে এই গেরুয়া দাড়ির প্রবণতা তৈরি করেছেন বাংলাদেশি বুড়োরা। পেকে যাওয়া সাদা দাড়ি বা কাঁচা পাকা দাড়ি গেরুয়া রঙ করে নিলে এক লাফে অনেকটাই বয়স কমমে যায় বলে দাবি বাংলাদেশি বুড়োদের।
গেরুয়ার সহজলভ্যতা - রঙ করতে হলে যে কোনও রঙই করা যা, হঠাৎ গেরুয়া কেন? এর পিছনে রয়েছে অর্থনৈতিক কারণ। দাড়ির এই গেরুয়া রঙ হচ্ছে হেনা লাগিয়ে। এই হেনা সহজে পাড়ার দোকানেই পাওয়া যায়, আর দামও ১০-১৫ টাকার মধ্যেই পড়ে। কিনে নিয়ে ৪০ মিনিট লাগিয়ে রাখলেই কেল্লাফতে।
চুল-দাড়ির সুস্বাস্থ্য - অনেকে আবার মনে করেন হেনা প্রাকৃতিক রঙ। এরমধ্যে রাসায়নিক কিছু নেই। তাই এই প্রাকৃতিক রঙ লাগালে চুল দাড়ির স্বাস্থ ভাল থাকে। তাই অনেকেই দাড়ির পাশাপাশি গোঁফ এমনকি চুলও রাঙিয়ে নিচ্ছেন।
মহম্মদ যোগ - এর সঙ্গে ধর্মীয় যোগও রয়েছে। অনেক ইসলামি বইতেই দাবি করা হয়েছে নবি মহম্মদও নাকি দাড়ি-গোঁফ হেনা করাতেন। তাই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ার ইচ্ছে থেকেও অনেকে দাড়ি হেনা দিয়ে গেরুয়া করে নিচ্ছেন। এই যুক্তি দিয়ে গেরুয়া দাড়ির ফ্যাশনে মেতেছেন অনেক ইমামরাও।
গেরুয়া দাড়ি বিপদের আশঙ্কা? যৌবনকে আঁকড়ে রাখার লক্ষ্য থেকে যে গেরুয়া দাড়ি ফ্যাশন ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছিল, তাই এখন বিপদের আশঙ্কা তৈরি করছে বলে মনে করছেন অনেকেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক মণিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন বর্তমানে এই গেরুয়া দাড়িকে বাংলাদেশি মুসলিমরা নিজেদের পরিচয় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। কাজেই গেরুয়া দাড়ির ঝড় ওঠাকে তিনি বাংলাদেশে মুসলিম মৌলবাদিদের প্রভাব বাড়ার ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।