'চিকেন নেক'এর সমাধানে মোদী-হাসিনা, ৫৫ বছর পর চালু হচ্ছে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ

চিন-এর শাসানির আবহে ফের তা চালু হতে চলেছে

এতে করে সমাধান হতে পারে 'চিকেন নেক' সমস্যার

১৭ ডিসেম্বর মোদী-হাসিনা ভার্চুয়াল সামিট

amartya lahiri | Published : Dec 14, 2020 5:39 PM IST
16
'চিকেন নেক'এর সমাধানে মোদী-হাসিনা, ৫৫ বছর পর চালু হচ্ছে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ

১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক ভার্চুয়াল দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই দিনই এক বিরাট পদক্ষেপ নিতে চলেছে দুই দেশ, যা ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে দারুণ গুরুত্ব বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় ৫৫ বছর পর ফের চালু হতে চলেছে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হলদিবাড়ি এবং বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার চিলাহাটির মধ্যে আন্তঃসীমান্ত রেল যোগাযোগ। এতে করে সমাধান হতে পারে 'চিকেন নেক' সমস্যার।

 

26

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে এই পদক্ষেপটি শুধুমাত্র ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নত করবে তাই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এবং অন্যান্য সীমান্তবর্তী দেশগুলির সঙ্গে নয়াদিল্লির যোগাযোগও বাড়বে। বিশেষ করে চিন সাম্প্রতিক সময়ে এই অঞ্চলে যেভাবে প্রভাব বাড়াতে শুরু করেছে, তাতে এই রোল যোগাযোগ ভারতকে কৌশলগত সুবিধাও দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

36

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে পর্যন্ত এই পথে নিয়মিত ট্রেন চলত। যুদ্ধের সময় থেকে ট্রেনের চাকা বন্দই হয়ে গিয়েছিল। ৫৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ ডিসেম্বর এই রুটের ফের রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করবেন বলে জানা গিয়েছে। ওই দিনই পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়কে স্মরণ করতে বাংলাদেশ বিজয় দিবস পালন করে। তবে উদ্বোধনের পরও এখনই ট্রেন চলা শুরু হবে না। বাংলাদেশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছর ২৬ মার্চ, অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস থেকে রেল পরিষেবাটি পুনরায় চালু হবে।

 

46

কোচবিহারের হলদিবাড়ি স্টেশনটি 'চিকেন নেক' নামে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডোর থেকে মাত্র 7৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মুরগীর যেমন বাকি দেহের সঙ্গে মাথাটি সরু ঘাড়ের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে, তেমনই ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ শিলিগুড়ি করিডোরই, উত্তর-পূর্ব  ভারতের রাজ্যগুলি এবং নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভুটান-এর মতো প্রতিবেশি দেশগুলির সঙ্গে দিল্লি ও দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ। এই কারণেই একে চিকেন নেক বা মুরগীর ঘাড় বলা হয়। বর্তমানে নাথু-লা পাস, ডোকলামের আশপাশ সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় যেভাবে চিন তার আগ্রাসী নীতি প্রয়োগ করতে শুরু করেছে, তাতে চিন বা অন্য কোনও ভারত বিরোধী শক্তি এই করিডোরটি অবরুদ্ধ করতে পারলেই উত্তর পূর্বের সঙ্গে বাকি ভারতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

 

56

এই অবস্থায় হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল পরিষেবা ভারতকে বিকল্প পথ দিতে পারে। এই পথেই উত্তর-পূর্ব ভারত এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলিতে নয়াদিল্লিতে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। বিদেশ নীতি বিশেষজ্ঞরা আরও দাবি করেছেন, এই নতুন রেলপথ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্যও আরও বাড়িয়ে তুলবে। পাশাপাশি, দুই পক্ষেই স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে এই রেল পরিষেবা আবার চালু করার দাবি করেছিলেন। বস্তুত বহু বাংলাদেশি নাগরিকই প্রতি বছর বাণিজ্য, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পর্যটন ইত্যাদি কারণে উত্তরবঙ্গ ও উত্তর পূর্ব ভারতে যাতায়াত করেন। তবে, এখনই যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা এই পথে চালু হচ্ছে না। প্রাথমিক পর্যায়ে শুধুই মালগাড়ি যাতায়াত করবে বলে জানা গিয়েছে।

 

66

একইসঙ্গে ভারত, বিবিআইএন ইনিশিয়েটিভ বা বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল উদ্যোগ-এর কাজে দ্রুততা আনার বিষয়েও হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ হল বেশ কয়েকটি রেল ও সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয় প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলা। এই প্রকল্পটি আঞ্চলিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন অর্থনীতি বিষয়ক বিজেপির মুখপাত্র গোপাল কৃষ্ণ আগরওয়াল। তিনি আরও বলেছেন, সকল সদস্য দেশগুলিই বাণিজ্যের কারণে একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত, তাই এই প্রকল্পটি সকলেই উপকৃত হবে।

 

Share this Photo Gallery
click me!

Latest Videos

Recommended Photos