'আত্মনির্ভর ভারত'এর মন্ত্রে শুরু হচ্ছে 'এরো ইন্ডিয়া' - বিশ্বের প্রথম হাইব্রিড স্পেস শো
'আত্মনির্ভর ভারত অভিযান' এবং 'মেক ইন ইন্ডিয়া'-র নীতিতে জোর এবং কোভিড মহামারির ছায়ার মধ্যে ৩ ফেব্রুয়ারি, বুধবার থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে এরো ইন্ডিয়া ২০২১। অনেক সংস্থাই যেমন প্রতিনিধিদের সশরীরে পাঠিয়ে তাদের সামরিক সরঞ্জামের প্রদর্শনী করবে তেমনই মহামারির প্রেক্ষিতে এবার অনেক সংস্থাই ভার্চুয়াল প্রদর্শনীও উপস্থাপন করবে। এই দুই ধরণের প্রদর্শনীর সংমিশ্রণেই জমে উঠতে চলেছে এই দ্বিবার্ষিক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের ১৩তম সংস্করণ।
এটিই বিশ্বের প্রথম হাইব্রিড স্পেস শো বলে দাবি করছেন কর্মকর্তারা।
ইভেন্টে সশরীরে অংশ নিতে ৩১ জানুয়ারী সকাল ৯ টা বা তারপরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করিয়ে কোভিড-১৯ নেতিবাচক রিপোর্ট থাকা আবশ্যক।
এবার প্রতিদিন এই প্রদর্শনী দেখার জন্য মাত্র ৩,০০০ দর্শককে সশরীরে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছে ৫২৩ টি ভারতীয় সংস্থা। এছাড়া ১৪ টি দেশ থেকে ৭৪৮টি বিদেশি সংস্থাও অংশ নিচ্ছে।
সংস্থাগুলি এই প্রদর্শনীতে তাদের সামরিক সরঞ্জামগুলির দক্ষতা, তাদের হাতে থাকা সর্বশেষ প্রযুক্তি, সমাধান, পণ্য এবং পরিষেবাদি তুলে ধরবে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও (DRDO)-ও তাদের সাম্প্রতিকতম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে এবং তাদের বিকশিত বেশ কয়েকটি সামরিক ব্যবস্থার প্রদর্শন করবে।
এবারের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দারুণভাবে আলোচিত হচ্ছে ভারত সরকারের 'মেক-ইন-ইন্ডিয়া' নীতি এবং 'আত্মনির্ভর ভারত অভিযান'এর দৃষ্টিভঙ্গী। বস্তুত গত বছর থেকেই বেশ কয়েকটি সংস্থা ভারতেই যুদ্ধবিমান-সহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের কারখানা গড়ার প্রস্তাবও দিতে শুরু করেছে।
এবারের প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম 'সূর্য কিরণ' বিমান এবং 'সারং' হেলিকপ্টারের প্রদর্শনী। আর বিদেশি বিমানগুলির প্রদর্শনীর মধ্যে তীব্র আগ্রহ রয়েছে, আমেরিকার দক্ষিণ ডাকোটা-র এলসওয়ার্থ বায়ুসেনাঘাঁটি থেকে আসা মার্কিন ২৮তম বম্ব উইং-এর সদস্য বি-১ বি ল্যান্সার ভারী বোমারু বিমান-এর 'ফ্লাই বাই'।
এছাড়া, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড প্রদর্শন করবে আত্মনির্ভর ফর্মেশন ফ্লাইট। এই ফর্মেশনে থাকবে হাল্কা যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষক বিমান (LIFT Trainer), এইচটিটি-৪০ (HTT-40), আইজেটি (IJT), অ্যাডভান্সড হক এমকে ১৩২ এবং সিভিল ডু-২২৮-এর মতো হ্যালের নিজেদের তৈরি বিমান।
কর্মকর্তাদের দাবি, আসন্ন প্রদর্শনীতে স্পেস ইন্ডাস্ট্রির বিশ্বমানের সংস্থাগুলি ও বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি, বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা থিঙ্ক-ট্যাঙ্কদের অংশগ্রহণও দেখা যাবে। উড়ান শিল্পে তথ্য, ধারণা এবং নতুন উন্নয়নের বিনিময়ের অনন্য সুযোগ এই প্রদর্শনী।
সেইসঙ্গে দেশিয় উড়ান শিল্পকে পূর্ণাঙ্গতা দেওয়ার পাশাপাশি এটি 'মেক ইন ইন্ডিয়া'-র নীতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং মহাকাশ উৎসাহী, সম্ভাবনাময় প্রতিরক্ষা শিল্পোদ্যোগ, উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্টার্ট-আপস এবং অন্যান্য সমস্ত অংশীদারদের অংশগ্রহণের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হবে এই প্রদর্শনী। বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা শিল্প এবং মহাকাশ ক্ষেত্রের অগ্রগতির সাক্ষী থাকা থেকে এই প্রদর্শনীতে অনেক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি এবং শিল্পোদ্যোগের সঙ্গে যোগাযোগেরও সুযোগ তৈরি হবে।