বই পড়লেও মৃত্যুদণ্ড, হাজারটা নিষেধাজ্ঞা - কেমন ছিল তালিবানি শাসন, দেখুন ছবিতে ছবিতে
দীর্ঘ দুই দশক পর আফগানিস্তান থেকে সরছে মার্কিন সেনা, ফের বাড়ছে তালিবানি ছায়া। ইতিমধ্যেই সেই দেশের ৮৫ শতাংশ এলাকা তাদের দখলে বলে দাবি করেছে তারা। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান ছিল তালিবানি শাসনে। কাকে বলে তালিবানি শাসন?
সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার রাজ চলত আফগানিস্তানে। তুচ্ছ তুচ্ছ জিনিসে ছিল নিষেধাজ্ঞা। তা না মানলেই মিলত কঠোর শাস্তি। মহিলারা ছিলেন সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী, তবে পুরুষরাও কম হেনস্থা হননি। দেখে নেওয়া যাক এমন কিছু সামান্য জিনিস, যা সেই সময় আফগানিস্তানে ছিল একেবারে নিষিদ্ধ -
টিভি দেখা
বিনোদন হোক বা তথ্য সংগ্রহ, টিভি প্রায় সবার ঘরেই থাকে। কিন্তু, তালিবানি শাসনে টিভি ছিল 'ইসলামের অপমান' হিসাবে বিবেচিত। তাই আফগানিস্তানে কারোর ঘরে টিভি রাখার অধিকার ছিল না।
পুরুষদের দাড়ি কাটা
পুরুষদের দাড়ি কাটা ছিল নিষিদ্ধ। কারণ তালিবানি মতে কোরান এবং হাদিসে তাই লেখা আছে। আর নবীজি নিজেও দাড়ি রাখতেন। তাই সকল পুরুষের দাড়ি রাখা ছিল বাধ্যতামূলক।
সংগীত চর্চা
যেকোনও ধরণের গান-বাজনা-নাচ, তালিবানি শাসনে ছিল অ-ইসলামিক। কেউ এই শিল্পগুলির চর্চা করলে তাকে মোটা জরিমানা দিতে হত। গান শোনা বা নাচ দেখার ক্ষেত্রেও ছিল একই নিয়ম।
পাখি পোষা
বাড়িতে বা অন্য কোথাও পাখি পোষা নিষিদ্ধ ছিল। তালিবানি বিশ্বাসে পাখি পোষাও ছিল ইসলাম বিরোধী। কারোর বাড়িতে পাখি পাওয়া গেলে তাকে কড়া শাস্তি দেওয়া হতো এবং পাখিগুলিকে হত্যা করা হতো।
ঘুড়ি ওড়ানো
ঘুড়ি ওড়ানোর মতো সময় কাটানোর প্রাচীন ক্রীড়াকেও নিষিদ্ধ করেছিল তালিবানরা। তাদের বক্তব্য ছিল ঘুড়ি ওড়ালে মানুষ আল্লার পথ থেকে বিচ্যুত হয়।
সাহিত্য পাঠ
প্রত্যেকের এমনকী বাড়িতে ঢুকে ঢুকে বইপত্তর তল্লাশী করা হত। কোনও সাহিত্যকর্ম ইসলামের বিরোধী বলে মনে হলেই সেই বইয়ের মালিককে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হতো।
ইন্টারনেট ব্যবহার
আফগান নাগরিকদের তো বটেই এমনকী আফগানিস্তানের বিদেশী দূতাবাসেগুলিকেও ইন্টারনেট ব্।বহার করতে দেওয়া হতো না।
মহিলাদের একা বাড়ির বাইরে যাওয়া
পুরুষ ছাড়া কোনও মহিলার বাড়ির বাইরে বের হওয়া ছিল নিষিদ্ধ। বাইরে বের হলে আপাদমস্তক ঢেকে বাবা, ভাই বা স্বামী, ছেলে (এমনকী কোলের হলেও)-র মতো পুরুষ আত্মীয়কে সঙ্গে নিতে হতো।
শ্রম দিবস
১ মে শ্রদিবস উপলক্ষ্যে গোটা বিশ্বে যে ছুটি দেওয়া হয়, সেই শ্রমদিবসের ছুটিও নিষিদ্ধ করেছিল তালিবানি শাসকরা। কারণ, তাদের বিশ্বাস ছিল এই ছুটিটা হল কমিউনিস্টদের ছুটি।