পঞ্জশির- আবারও কী ২০ বছর আগের ইতিহাস ফিরে দেখবে আফগানিস্তান। কারণ এখনও তালিবানদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে আহমেদ মাসুদের পঞ্জশির। আগেরও বারও তালিবানদেরক দখলদারী মেনে নেয়নি এই উপত্যকা। সেবার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আহমেদ শাহর বাবা শাহ মাসুদ। এবার অবশ্য তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছেন পঞ্জশিরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। শান্তিচুক্তির বিষয়ে ৮০ শতাংশ নিশ্চিত তারা।
পঞ্জশির- পাহাড়ঘেরা উপত্যকা। কারাকোরাম পর্বতমালা আর পঞ্জশির নদী- এই নিয়ে আফগানিস্তান থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই এলাকা। আফগানিস্তানেপ সিংহভাগ দখল নিলেও এখনও পর্যন্ত পঞ্জশির কব্জা করতে পারেনি তালিবানরা। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই এলাকায় পা রাখতে পারেনি না।
210
আফগানিস্তান ন্যাশানাল ফ্রন্ট- পঞ্জশিরের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিচ্ছে।তাদের নেতা আহমেদ মাসুদ। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন তালিবানদের বিরুদ্ধে আত্মসমর্পণ করার কোনও প্রশ্নই নেই। আমেরিকার কাছ থেকে গোলা বারুদও চেয়েছিলেন। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন তেমন কোনও সাড়া দেয়নি। যদিও তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন প্রাক্তন আফগান উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহ।
310
তালিবানরা জানিয়েছে পঞ্জশিরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান করতে চাইছে তারা। শান্তিচুক্তির বিষয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ। যার অর্থ পঞ্জশির আবারও তালিবানদের থেকে মুক্ত থাকবে।
410
১৯৯৬-২০০১ রাশিয়ার পতনের পরে আফগানিস্তানের দখল নিয়েছিল তালিবানরা। কিন্তু সেই সময়ও পঞ্জশির দখল অধরাই থেকে গিয়েছিল তালিবানদের কাছে। সেবার স্বপ্ন পুরণে বাধা ছিল তৎকালীন নেতা শাহ মাসুদ। এবার তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করেছেন ছেলে আহমেদ মাসুদ।
510
তালিবান নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা পঞ্জশিরের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওই এলাকার প্রবীণ আর প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কথা বলা হচ্ছে জিহাদি কমান্ডারদের সঙ্গেও। যুদ্ধ নয়- আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান করা হবে বলেও জানিয়েছে তালিবানরা।
610
পাহাড় ঘেরা উপত্যকা পঞ্জশির। সেখানের মানুষও স্বাধীনতা প্রিয়। ঘানির প্রশাসনের কাছ থেকেই স্বায়ত্ব শাসন দাবি করেছিল তারা। কিন্তু তা পায়নি। এবার তালিবানদের সঙ্গে সেই বিষয় নিয়েই আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে পঞ্জশিরও জানিয়েছে তালিবানদের কাছে তারা মাথা নত করবে না। পঞ্জশির হল শেষ এলাকা যেথানে তালিবানরা এখনও পা রাখতে পারেনি।
710
তালিবান নেতারা বলছেন শান্তি চুক্তির কথা। তার মানে কী তালিবানরা পঞ্জশির দখলের পরিকল্পনা ত্যাগ করবে। কারণ স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে আরবান্দাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার দখল নিয়েছে তালিবানরা। পঞ্জশিরের খাবার ও প্রয়োজনীয় সরদ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
810
যদিও তাবিলানরা বলছে কোনও যুদ্ধ চায়না। একই কথা বলেছিলেন মাসুদ। তিনিও বলেছিলেন প্রথম কর্তব্যই হল রক্তপাত এড়ান। কিন্তু তালিবানদের কাছে বশ্যতা স্বীকার করবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে তালিবানরা যদি আলোচনায় রাজি না হয় তাহলে তারা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য তৈরি রয়েছে।
910
তবে তালিবান আর পঞ্জশিরের মধ্য কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। পঞ্জশিরের শান্তিচুক্তি কী শুধু পঞ্জশিরের জন্য, না তা সমগ্র আফগানিস্তানের জন্য তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ মাসুদ বলেছিলেন তিনি আফগানিস্থানের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবেন।
1010
১৭ অগাস্ট কাবিল দখল করেছিল তালিবানরা। কিন্তু সেই সময় একাধিক এলাকা তালিবানদের হাতছাড়া হয়েছিল। বর্তমানে সেগুলি পুনরায় দখলে নিয়েছে তারা। কিন্তু বারবারই কী তালিবানদের হার মানতে হবে এই পাহাড়ি উপত্যাকায় এসে। তার উত্তর দেবে সময়।