আজ বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় পশুরাজ, আন্তর্জাতিক সিংহ দিবসে জানুন বনের রাজাকে নিয়ে নানা চমকপ্রদ তথ্য

সিংহকে বলা হয় রাজকীয় বন্যপ্রাণী অর্থাৎ বনের রাজা। কিন্তু চোরা শিকারিদের রমরমাতে এই প্রাণীটিই এখন বিপন্ন প্রজাতির তালিকায়। এর দুটো প্রজাতি এখনও টিকে আছে- আফ্রিকান সিংহ ও এশিয় সিংহ। মানুষের কাছে বরবারই ক্যারিশম্যাটিক প্রাণী হিসেবে পরিচিত এই সিংহ। তেজস্বী, ক্ষিপ্র এবং অসাধারণ সুন্দর পশুরাজকে তাই নিজেদের জাতীয় পশু হিসাবে বেছে নিয়েছে একসময় গোটা বিশ্বে রাজত্ব করা ব্রিটিশরা। রানি ভিক্টোরিয়ার সাম্রাজ্য অস্ত গেলেও আজও পশুরাজের সেই অমোঘ আকর্ষণ বর্তমান। তাই  বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পণ্যের ব্র্যান্ডিং ও বিজ্ঞাপনে অহরহই এই প্রাণীটির ব্যবহার চোখে পড়ে। আন্তর্জাতিক সিংহ দিবসে জেনে নিন পশুরাজ সম্পর্কে অজানা নানা কথা।

Asianet News Bangla | Published : Aug 10, 2020 11:32 AM IST

113
আজ  বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় পশুরাজ, আন্তর্জাতিক সিংহ দিবসে জানুন বনের  রাজাকে নিয়ে নানা চমকপ্রদ তথ্য

 
সিংহের প্রজাতি - সিংহ ফেলিডি পরিবারের প্রাণী যা প্যানথেরা গোত্রের বৃহৎ বিড়ালের একটি। সিংহের মূলত দুটি উপপ্রজাতি বর্তমানে টিকে আছে। একটি হল আফ্রিকান সিংহ ও অপরটি এশীয় সিংহ। 

213

সিংহের গর্জন সবচেয়ে বেশি জোরালো - বিড়াল প্রজাতির যত প্রাণী আছে তার মধ্যে সিংহের গর্জনই সবচেয়ে বেশি জোরালো। এই গর্জন এতই তীব্র যে এটি ১১৪ ডেসিবল হতে পারে এবং শোনা যেতে পারে পাঁচ মাইল দূর থেকেও। সিংহের ভোকাল কর্ড চতুর্ভুজ আকারের এবং চ্যাপটা। এ কারণেই এরা অল্প চেষ্টাতেই শক্তিশালী গর্জন করতে পারে।

313

পুরুষ সিংহ দিনে ৪০ কেজি মাংস খায় - বেঁচে থাকতে হলে একটি নারী সিংহের দিনে গড়ে পাঁচ কেজি এবং পুরুষ সিংহের সাত কেজি মাংসের দরকার হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এরা এর চেয়েও অনেক বেশি মাংস খেতে পারে পশুরাজ। একটি সিংহী একদিনে ২৫ কেজি এবং একটি সিংহ একবারেই  ৪০ কেজিরও বেশি মাংস খেতে পারে।

413

ঘণ্টায় ৫০ মাইল গতিতে দৌড়তে পারে - বন্যপ্রাণীদের মধ্যে দ্বিতীয় দ্রুততম প্রাণী সিংহ, ঘণ্টায় ৫০ মাইল গতিতে দৌড়তে পারে। তবে এই দ্রুত গতি শুধু স্বল্প দূরত্বের জন্য। আর এই কারণে কোনো শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে তাই খুব কাছ থেকে আক্রমণ শুরু করতে হয় পশুরাজকে।

513

কেশর থেকে জানা যায় বয়স - পুরুষ সিংহ চেনার সহজ উপায় তার কেশর। এর রঙ যত গাঢ়, বয়সও ততই বেশি। পুরুষ সিংহ থেকে প্রচুর টেস্টোসটেরন হরমোন নির্গত হয়। তাই এর শক্তিও বেশি। এই কারণেই কালো কেশরের পুরুষ সিংহ বহু সংখ্যক নারী সিংহকে আকৃষ্ট করতে পারে।

613

লেজের প্রান্তে পশমের গোছা-  বিড়াল প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে একমাত্র সিংহেরই লেজের একেবারে শেষ প্রান্তে পশমের গোছা আছে। অন্যান্য প্রাণীর সাথে এটি যোগাযোগের একটি হাতিয়ার। তার পালে আরো যেসব সদস্য থাকে এই গোছার মাধ্যমে সে তাদেরকে বার্তা দিয়ে থাকে। লেজের এই গোছার মাধ্যমে অন্যদের দিক নির্দেশনা দেয়, আদেশ দেয় এবং ভালোবাসাও প্রকাশ করে থাকে।

713

সবচেয়ে বৃদ্ধ সিংহের বয়স ২৯ বছর - সিংহের গড় আয়ু ১৩ বছর। কিন্তু বলা হয় খাঁচার সিংহ বাঁচে বেশি দিন। কারণ খাঁচায় সিংহকে শক্তি ও শিকারের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করতে হয় না। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বয়সী যে সিংহের রেকর্ড করা হয়েছে, তার বয়স ছিল ২৯ বছর।

813

রাতে দৃষ্টিশক্তি মানুষের চেয়ে বেশি - দিনের বেলায় সিংহ ও মানুষের দৃষ্টিশক্তির খুব বেশি পার্থক্য নেই। কিন্তু রাতের বেলায় এই  প্রাণীটির দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি বদলে যায়। সিংহের চোখে আছে প্রচুর ফটো-রিসেপ্টর সেল। ফলে দেখার জন্য মানুষের চোখে যত আলোর প্রয়োজন হয় তার ছয় ভাগের এক ভাগ আলোতেই সিংহ দেখতে পায়।

913

শ্রবণশক্তি অত্যন্ত তীব্র- সিংহের শ্রবণশক্তি অত্যন্ত তীব্র। এরা  যেদিক থেকে শব্দ আসে কান সেদিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে। এই স্পর্শকাতর শ্রবণশক্তির কারণে সহজেই সিংহ  শিকারকে শনাক্ত করতে পারে। এমনকি এক মাইল দূরে থাকলেও সিংহ ঠিকই বুঝতে পারে তার খাদ্যটি এখন কোথায় আছে।

1013

সিংহের ওজন-  পুরুষ সিংহের সাধারণত ওজন হয় ১৫০ থেকে ২৫০ কিলোগ্রামের মধ্যে। বড় সিংহর হলে ২৫০ থেকে ২৭০ কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারে। স্ত্রী সিংহের ওজন হয় সাধারণত ১২০ থেকে ১৮২ কেজির মধ্যে। একমাত্র পুরুষ সিংহদের কেশর থাকে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি থেকে ৮ ফুট ২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সিংহ মাংসাশী প্রাণী। বিভিন্ন জাতের হরিণ, জেব্রা, বুনো মহিষ, জিরাফ, শূকর অত্যাদি এদের প্রধান খাদ্য। 

1113

সিংহ শিশুদের বিশেষত্ব- শিশু সিংহ জন্মের পর অন্ধ থাকে। তারা ১ সপ্তাহ বয়সে চোখ খুলতে পারে এবং যতদিন ২ সপ্তাহ বয়স না হয় ততদিন ভালো করে দেখতে পারে না। সিংহদের নির্দিষ্ট বাসা নেই, যেখানে তারা চিরকাল থাকবে। সিংহদের নির্দষ্টি পালানোর জায়গা থাকে। যেটি তারা গোপন রাখে। যদি অন্য দলের সিংহ দেখে ফেলে, তাহলে তারা সেই স্থান ত্যাগ করে। 

1213

বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় এখন সিংহ- আফ্রিকায় সিংহের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমছে। বলা হচ্ছে, গত তিন প্রজন্মে এই প্রাণীটির সংখ্যা সেখানে ৪০% হ্রাস পেয়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে সিংহের বসতি ধ্বংস করা, খাবার কমে যাওয়া। সিংহ শিকারও একটি বড় কারণ। তবে অনুমান করা হয় যে ২০,০০০ থেকে ৩৯,০০০ সিংহ এখনও সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

1313


এশিয়ায় সিংহ মেলে ভারতের গির অরণ্যে- আফ্রিকায় সিংহ কমলেও গুজরাতে গির জাতীয় উদ্যানে গত পাঁচ বছরে ২৯ শতাংশ সিংহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গুজরাত  সরকারের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গুজরাতের গির অরণ্যে সিংহের সংখ্যা প্রায় ৬৭৪টি। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এশিয়ার সিংহ গণনা করা হয়। ২০১৫ এর মে মাসে করা গণনা অনুযায়ী গির অরণ্যে সিংহের সংখ্যা ছিল ৫২৩টি।

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos