দুর্গাপুজো মণ্ডপের পাশাপাশি আজ বহু প্রতীক্ষিত টালা সেতুরও উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহালয়ার পরে এই সেতু উদ্বোধন করার কথা থাকলেও সেতু নির্মাণের যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হল।
মোট ৪৬৫.১১ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হল ৭৪৩.৪৩ মিটার লম্বা টালা সেতু। ২২ সেপ্টেম্বর সেতুটির উদ্বোধন হলেও আপাতত প্রথম এক সপ্তাহ ছোট যানবাহন চলাচল করবে এই সেতুর ওপর দিয়ে। পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, এক সপ্তাহ পর সেখানে ভারী যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে টালা সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর আগে ওই স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়ে সরকারি সংস্থা রাইটস জানায়, টালা সেতু ভেঙে ফেলে নতুন নির্মাণ প্রয়োজন। সেতু বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়নাও একই সুপারিশ করেন।
নবনির্মিত টালা সেতুর দ্বারা উত্তর কলকাতার বাসিন্দাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিস্তর সুবিধা হবে বলে দাবি কলকাতা পুরসভার। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে নতুন এই সেতুটি তৈরি হওয়ায় তা আগের তুলনায় অনেক বেশি মজবুত হয়েছে।
উদ্বোধনের পরেই টালা সেতুতে বাস চালানোর আবেদন জানিয়েছিল বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি। সেই আবেদন জমা পড়েছিল পরিবহণ দফতরে। কিন্তু সেই আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
সেতু নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা জানিয়েছে, চার লেনের ওই সেতু দু’টি ফ্ল্যাঙ্কে বিভক্ত। উদ্বোধনের পরে এখন শুধুই ডান দিকের ফ্ল্যাঙ্কটি সাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে।
পুরনো সেতুর যে দিক দিয়ে ডানলপ থেকে শ্যামবাজারমুখী যান চলাচল করত, নতুন সেতুর সেই ফ্ল্যাঙ্কটি দিয়েই শুধু ছোট গাড়ি চলাচল করানো হতে পারে। ওই ফ্ল্যাঙ্কটিকে দ্বিমুখী রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার সেটি একমুখী রেখে ব্যবহার করা হতে পারে সেতুর পার্শ্ববর্তী অন্য রাস্তা।
এর আগে টালা সেতুর ভারবহন ক্ষমতা ছিল ১৫০ টন। এ বার সেই ভারবহন ক্ষমতা বাড়ছে অনেকটাই। ২০২২-এর ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হতে পারে সেতুর দু’টি ফ্ল্যাঙ্কই।
আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ এই সেতুর উদ্বোধন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেতুটি তৈরি করতে কারিগরি সহায়তা নেওয়া হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের।
আগে ভারত ফরওয়ার্ড ব্লকের চেয়ারম্যান প্রয়াত নেতা হেমন্তকুমার বসুর স্মরণে এই ব্রিজের নাম রাখা হয়েছিল হেমন্ত সেতু। এবার নবনির্মিত টালা সেতুর কী নাম রাখা হয়, তা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে রয়েছে জল্পনা।