দেশের তৃতীয় মহিলা লেফটেন্যান্ট জেনারেল, মাতৃত্ব থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মাধুরী কানিতকার
টানা ৩৭ বছর ধরে ভারতীয় সেনবাহিনীতে কর্মরত তিনি। সশস্ত্র বাহিনী মেডিকেল কলেজ পুনের প্রাক্তন ডিন মেজর জেনারেল মাধুরী কানিতকরকে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের (সিডিএস) অধীনে ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফের সদর দফতরে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাধুরীর স্বামী রাজীব কণিতকরও লেফটেন্যান্ট জেনারেল ছিলেন। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম, যখন স্বামী-স্ত্রী দুজনই সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হয়েছেন।
deblina dey | Published : Mar 2, 2020 6:14 AM IST / Updated: Mar 02 2020, 11:50 AM IST
শনিবার পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্ট চিকিৎসক ও মেজর জেনারেল মাধুরী কণিতকর ভারতীয় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে নিয়োজিত হয়েছেন। মাধুরী কানিতকর হলেন প্রথম মহিলা শিশু বিশেষজ্ঞ যিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন।
পুনিতা অরোরা হলেন প্রথম মহিলা যিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেলের পদে ছিলেন। পুনিতা ছিলেন একজন সার্জন ভাইস-অ্যাডমিরাল এবং ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন থ্রি-স্টার ফ্ল্যাগ অফিসার। পরে, ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) মহিলা এয়ার মার্শাল পদ্মাবতী বন্দোপাধ্যায় এই পদপ্রাপ্ত দ্বিতীয় মহিলা।
মেজর জেনারেল মাধুরী কণিতকরকে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের (সিডিএস) অধীনে পোস্ট করা হয়েছে। তাঁর প্রধান দায়িত্ব হ'ল যৌথ পরিকল্পনা ও সংহতকরণের মাধ্যমে পরিষেবা সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ও পরিষেবা পরিচালনায় বৃহত্তর সংযোগের জন্য বরাদ্দ বাজেটের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
মাধুরী কানিতকর-এর কথায়, "সাফল্যের কোনও শর্টকাট হয় না। ডাক্তারী পাশ করার পর সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে প্রশিক্ষণ চলেছিল বেশ কয়েক মাস। অনেকেই সেই পরিশ্রম সামলে উঠতে পারতো না ফলে হাল ছেড়ে দিত। তবে আমি উপভোগ করতাম সবটাই। আমি জানতাম, এই পরিশ্রম করেই আমি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। কারণ সাফল্যের কোনও শর্টকাট হয় না।"
তাঁর সঙ্গে পাশ করা অনেক মেয়েই প্রশিক্ষণ শেষ করতে না পেরে ছেড়ে চলে গেছিলেন। অনেকে আবার বিয়ে করে নিয়েছেন। এমনই এক দীর্ঘ পরিশ্রমের পথ পেরিয়েই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন মাধুরী।
তিনি জানিয়েছেন দেশের এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে তাঁর পোস্টিং হয়নি। সমস্ত কাজে তাঁর উৎসাহ, দক্ষতা, পারদর্শিতা খুব সহজেই পেশাগত ভাবে সফল করে তোলে তাঁকে। এই পেশার পথেই আলাপ হয় রাজীব কানিতকরের সঙ্গে যিনি বর্তমানে তাঁর জীবনসঙ্গী।
পরিবার ও কেরিয়ার দুই সমানভাবে সামাল দিয়েছেন তিনি। বিয়ের পরেই পাশ করেছেন এমবিবিএস। প্রথম সন্তান জন্মানোর পর পাশ করেন এমডি। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় সন্তান ছোট থাকা অবস্থাতেই যোগ দিয়েছেন সেনাবাহিনীতে।
মাধুরী কণিতকার এএফএমসিতে টপার হয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রপতি পদকও পেয়েছিলেন। তিনি এইমস থেকে স্নাতকোত্তর। তিনি প্রধানমন্ত্রীর বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত পরামর্শক বোর্ডের সদস্যও ছিলেন। ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্ট, নেফ্রোলজির অধ্যাপিকা সেই সঙ্গে একজন মা সব ভূমিকাতেই সমান পারদর্শী ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাধুরী কানিতকর। দেশের সমস্ত মেয়েদের জন্য তিনি যে এক অভিনব দৃষ্টান্ত তা আর বলার জায়গা রাখে না।