পথে-ঘাটে খুল্লামখুল্লা নারী সঙ্গের ডাক, ফাঁদে পা দিয়েছেন কি মরেছেন
শুধু নামমাত্র একটি রেজিস্ট্রেশন। ব্যস সরাসরি তন্বী ও সুন্দরী মহিলাদের সঙ্গে বোল্ড রিলেশনের ছাড়পত্র। এমনই কত বিজ্ঞাপণের ফাঁদে পা দিয়ে পকেট ফাঁকা হয়ে গিয়েছে বহু মানুষের। এমন প্রতারণার জাল ছড়িয়ে ছিল শহরের অলিতে গলিতে। হয়তো আপনার বাড়ির সামনের কোনও ওয়ালে অথবা কোনও ল্যাম্পপোস্টের গায়ে প্রায়শই চোখে পড়ত এই ধরনের বিজ্ঞাপন।
কয়েক লাইনের বিজ্ঞাপণের ফলে কিছু সময়ে জন্য রঙিন রাতের হাতছানি। রাজপথের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে এই ধরনের এসকর্ট চক্র। স্বনামধন্য সংবাদ মাধ্যমের পাতায় বিজ্ঞাপনে ভরে গিয়েছিল এই ধরণের বিজ্ঞাপণ। কোথাও আবার স্পা এর আড়ালে চলছিল উদ্দাম যৌনতার ব্যবসা।
শুধু এগুলোই নয় মোবাইলে ম্যসেজ বা ফোন কলেও চলছিল বিজ্ঞাপণের ছড়াছড়ি। সংস্থার মেম্বারশিপ নিলে গ্যারান্টি সহকারে নিঃসঙ্গতা দূর করা হয়। ছিল নিঃসঙ্গতা কাটানো, সাক্ষাতের সুযোগ এবং ডিপ রিলেশন এই ধরণের মেম্বারশিপের সুবিধাও।
শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপনের কলামে মিডল ম্যানদের সন্ধান। মাত্র একটা ফোনেই কাজ হয় সমস্ত। তারপর রেজিস্ট্রেশন করে নিলেই মিলত নিষিদ্ধ দুনিয়ায় অবাধ প্রবেশের ছাড়পত্র।
এই নেশায় বুঁদ হয়েছিল উত্তর থেকে দক্ষিণ, বালি থেকে বেলগাছিয়া, গড়িয়া থেকে গড়িয়াহাট, সংবাদপত্রের পাতায় পাতায় উষ্ণতার ছোঁয়া। মনকাড়া নামেই কত নাবালক থেকে যুবকের মনের কোনে রঙিন রাতের স্বপ্ন হাতছানি দিয়েছে।
বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করলেই আবেদনময়ী কণ্ঠে পায়েল, বিপাশা, সুস্মিতারা বুঝিয়ে দেবে মেম্বারশিপ গ্রহণের পদ্ধতি। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, গৃহবধূ বা ডিভোর্সি একাধিক মহিলা টাকার জন্য জড়িয়ে ছিলেন ব্যস, বোল্ড রিলেশন তৈরির ফাঁদে পা দিয়ে ফেললেন। প্রতারিত হওয়ার প্রথম ধাপ। কীভাবে জাল বিছিয়েছে এই এসকর্ট চক্র?
ফোন করে মেম্বারশিপ নেওয়ার পরে নতুন ধাপ। আবারও টাকা নেওয়া হত মেডিক্যাল চেকআপ এর নামে। এছাড়াও চলত নানান অজুহাতে টাকা নেওয়ার পালা। যতক্ষণে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয় ততক্ষণে বহু টাকা এর জন্য খরচ হয়ে যায়। আর টাকা ফেরত চাইলে চলতে থাকে একের পর এক থ্রেট কল।
প্রশাসনের তরফ থেকে জানা গিয়েছিল যে এই ধরণের সংস্থাগুলি গ্রামের অশিক্ষিত মানুষদের থেকে ডকুমেন্ট জোগার করে এই সিমগুলো তুলে এই কাজে লাগাতো। এই নম্বরগুলো পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রসাশনের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এই বিষয়ে জানা গিয়েছে। যেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকাগুলি নেওয়া হত তাতেও কারচুপি।
প্রসাশনের কাছে গিয়ে কেউ লজ্জায় কোনও অভিযোগ দায়ের করত না। অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, এমনটাই জানিয়েছে প্রসাশন। এছাড়াও জানিয়েছে যে এমন ধরনের কোনও বিজ্ঞাপণের ফাঁদে পা দেওয়ার আগে চিন্তা করুন। এখনও এমন জাল চুপেচাপে ছড়িয়ে রয়েছে।