মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনের সফর একটা ইতিহাস। কলেজ জীবনে কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা। তারপর বহু ঘাত-প্রতিঘাত, লড়াই, সংগ্রাম, আন্দোলনের পর আজ তিনি বাংলার মসনদে। তার 'দিদি' নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি। আজ বাংলা তথা দেশের লড়াকু নেত্রী জন্মদিন। ১৯৫৫ সালের ৫ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল থেকেই শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন মাননীয়া। দলের তরফ থেকেও রাজ্য জুড়ে পালিত হচ্ছে দিনটি। আজকের দিনে দেখে নেওয়া যাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ার এক ঝলকে।
কলেজ জীবনে ছাত্র সংসদ করার পর ১৯৮৪ সালে সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে হারিয়ে লোকসভায় প্রথম প্রবেশ। প্রথম নির্বাচনেই সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে সকলকে চমকে দেন।
219
১৯৮৯ সালে সাফল্যের পর ব্যর্থতার সাক্ষীও থাকতে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মালিনী ভট্টাচার্যের কাছে যাদবপুর কেন্দ্রেই হেরে যান। তবে তাঁর রৈজনৈতির আন্দোলন থামেনি।
319
১৯৯০ সালে হাজরাতে সিপিআইএম কর্মীদের হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জখম হন। মাথা ফাটে তাঁর। সেই ঘটনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতির কেরিয়ারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
419
১৯৯১ সালে ফের এলেন লোকসভায়। দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে বিপ্লব দাশগুপ্তকে হারিয়ে। নরসিমা রাও সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন, ক্রীড়া, যুবকল্যাণ, নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী হন।
519
১৯৯৩ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মহাকরণ অভিযান। ১৩জন যুবকংগ্রেস কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। যারপর থেকে ২১ জুলাই শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
619
১৯৯৭ সালে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস নামে নতুন দল তৈরি করে নতুন করে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেন।
719
১৯৯৯ সালে নতুন দল গঠনের পরই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শরিক হন। রেলমন্ত্রীও হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
819
২০০১ সালে বনিবনা না হওয়ায় এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়েন। নির্বাচনে হারে পর সেই বছরই ফের যোগ দেন এনডিএ-তে।
919
২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য টিএমসির শোচনীয় পরজায় ঘটে। শুধু মাত্র দক্ষিণ কলকাতা আসনে জয়ী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এনডিএ সরকারের কয়লা এবং খনি দফতরের মন্ত্রী হন তিনি।
1019
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটাদের প্রস্তাবিত কারখানায় যাওয়ার সময় তাঁকে বলপূর্বক বাধা দেওয়া হয়। এরপর বিধানসভায় ভাঙচুর। প্রতিবাদে কলকাতায় ২৫ দিনের অনশন। সিঙ্গুর আন্দলন মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজৈনৈতিক জীবনের টার্নিং পয়েন্ট বলা হয়।
1119
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে পুলিসের গুলি চালনার ঘটনাতেই প্রতিবাদে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুর আন্দোলন নতুন ভবিষ্যৎ রচনা করে বঙ্গ রাজনীতির।
1219
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাপরিষদে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুরেও জয়ী। শক্ত হয় রাজনৈতির জমি।
1319
২০০৯ সালে বাম শাসনের অবসানের শুরু হয়। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট ৪২ টি আসনের মধ্যে ২৬টিতেই জয়ী হয়।
1419
২০১০ সালে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে জয়ী হয় ছোট লাল বাড়ির দখল নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১-র ললাট লিখন অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
1519
২০১১ - বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট ২৯৪ আসনের মধ্যে ২২৭ আসনে জয়ী। যে রাইটার্স থেকে একদিন তাকে বার করে দেওয়া হয়েছিল সেই রাইটার্সেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পা রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
1619
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৪২ টি আসনের মধ্যে ৩৪টি-তেই জিতে অভাবনীয় ফল করে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির উত্থানে কিছুটা ধাক্কা খায় তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ৩৪ থেক কমে আসন দাঁড়ায় ২২। বিজেপি পায় ১৮টি। রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের তকমা যায় বিজেপির দখলে।
1919
২০২১ সালে রাজ্য ফের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার দিকে নজর গোটা দেশের। তার আগে বাংলার লড়াকু নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিনে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকেও অনেক শুভেচ্ছা।