দেশের আজ ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবস। এই উৎসব উপলক্ষে দেশের রাজধানীতে চলছে এর রাজকীয় উদযাপন। এই দিনটি দেশের জন্য খুব বিশেষ ও তাতপর্যপূর্ণ, কারণ ১৯৩০ সালের এই দিনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দেশটিকে পূর্ণ স্বরাজ হিসাবে ঘোষণা করেছিল। তবে আপনি কি জানেন যে, দেশের এই সংবিধানের মূল অনুলিপি কোথায় এবং কোন অবস্থাতে রাখা হয়েছে? অন্যান্য দেশের মতো, আমাদের দেশের সংবিধানের আসল অনুলিপি সংরক্ষণ করে একটি গ্যাস চেম্বারে রাখা হয়েছে, যার একটি বিশেষ কারণ রয়েছে।
আরও পড়ুন- মাধ্যমিক পাশ করলেই মিলবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে চাকরি, বেতন মাসিক ২৩ হাজারেরও বেশি ...
বাস্তবে, সমগ্র বিশ্বে কেবল ভারতীয় সংবিধান রয়েছে, যা হাতে লেখা হয়েছিল। এটি হিন্দি এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় হাতের লেখায় তৈরি। এটি প্রেম বিহারী নারায়ণ রায়জাদা লিখেছেন একটি তাত্পর্যপূর্ণ পদ্ধতিতে। এছাড়াও, এর প্রতিটি পৃষ্ঠায় অলঙ্করণের কাজ করেছিলেন শান্তিনিকেতনের শিল্পীরা। এর মধ্যে নন্দলাল বসু, রাম মনোহর সিনহার মতো খ্যাতনামা শিল্পীদের নাম অন্তর্ভুক্ত। সংবিধানের প্রতিটি পৃষ্ঠায় ক্ষুদ্র শিল্পকর্ম খোদাই করা আছে। যা সিন্ধু সভ্যতা থেকে বর্তমান সময়কালের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আরও পড়ুন- মানুষ সমান বরফে ঢাকা উপত্যকা, কঠিন পরিস্থিতিতে মা ও নবজাতকে উদ্ধার করল সেনাবাহিনী ...
এই মূল সংবিধানের কাগজ এবং কালি খারাপ হওয়ার ভয় ছিল। আসল অনুলিপিটি এত বেশি কারুকার্য করা হয়য়েছিল, এটি সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেছিল। সুতরাং, সংবিধানের দুটি ভাষার অনুলিপি সংরক্ষণের মহড়া শুরু হয়েছিল। প্রথমে বিজ্ঞানীদের পরামর্শে এই অনুলিপিগুলি ফ্ল্যানেল কাপড়ে রাখা হয়েছিল। কারণ, সংবিধানের যে কাগজ এবং তার উপর লেখাগুলি নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যখনই জানা গেল যে, হাতে তৈরি কাগজগুলি জরাজীর্ণ হয়ে যায় এবং লেখাটি আরও হালকা হতে পারে। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এটি সুরক্ষিত রাখতে ১৯৫০ সালে হিলিয়াম ভরা একটি চেম্বারে এটি সংরক্ষণ করা হয়।
আরও পড়ুন- দেশের ৭২ তম সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবসে Google-এর Doodle শুভেচ্ছা ...
হিলিয়াম এমন একটি গ্যাস, যা অ-প্রতিক্রিয়াশীল। হিলিয়ামের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল গ্যাস কোনও জৈব বা অজৈব প্রক্রিয়ার অংশ হয় না। তাই এই গ্যাসের মধ্যে রাখলে কাগজটি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম বা সংবিধান লেখার জন্য ব্যবহৃত কালো কালি ম্লান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সুতরাং সিন্ধান্ত নেওয়া হয় যে সংবিধানের অনুলিপি হস্তাক্ষর হওয়ার পরেও এই গ্যাসের মধ্যে থাকলে নিরাপদ থাকবে। এটি সংসদের গ্রন্থাগারে রাখা হয়, যেখানে চব্বিশ ঘন্টা সিসিটিভির পর্যবেক্ষণ করা হয়। এছাড়াও প্রতিলিপিগুলি নিরাপদ আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি দুই মাস পরপর এটি পরীক্ষা করা হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের আসল অনুলিপিটি নিরাপদ থাকা উচিত।