কোন্ডমাই পাহাড়ে এক অনন্য উপায়ে পুজো করা হয় শুধুমাত্র বিছেদের। প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্র সহ দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত ইয়াদগিরি জেলায় অনুষ্ঠিত বিছে মেলার সাক্ষী হয়ে থাকলেন।
কর্ণাটক এবং সমগ্র মহারাষ্ট্রে নাগ পঞ্চমীর শুভ দিনে ভক্তরা কেউটে সাপকে বিশেষ পুজো দিয়ে থাকেন। কিন্তু, কোন্ডমাই পাহাড়ে এক অনন্য উপায়ে পুজো করা হয় শুধুমাত্র বিছেদের। প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে হাজার-হাজার ভক্ত ইয়াদগিরি জেলার গুরমাটকাল তালুকের কান্দাকুর কোন্ডমাই পাহাড়ে অনুষ্ঠিত বিছে মেলার সাক্ষী হয়ে থাকলেন। ভক্তরা এই দিনে এই বিছেদের নিজেদের শরীরের ওপর ঘোরাফেরা করতে দেন।
কোন্ডমাই মন্দিরটি কান্দাকুরের কোন্ডমাই পাহাড়ে অবস্থিত এবং কথিত আছে যে, এই মন্দিরটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পাহাড়ের ওপরে বিদ্যমান ছিল। কোন্ডমাই মানে বিছের দেবী। জুলাই-আগস্ট মাসে নগরপঞ্চমীতে পুরো পাহাড় ভরে যাবে লাল বিছেতে। শিশু, মহিলা, যুবক ও বৃদ্ধরা পাথরের নিচ থেকে এই বিছেগুলি বের করে এবং সারা শরীর বেয়ে এদের উঠতে দেয় এবং শরীরে বিছে বেয়ে চলার রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলি উপভোগ করে।
কিন্তু, অবিশ্বাস করলেও একথা একদম সত্যি যে, এখানকার বেশিরভাগ বিছেই কাউকে কামড়ায় না। নিজেদের শরীরের ওপর বাওয়া শেষ হলে মানুষ আবার তাদেরকে মাটিতে নামিয়ে দেন। কিছু ভক্ত বিশ্বাস করেন যে, তাঁরা যদি সেখানে 'আধার' অর্থাৎ পবিত্র ছাই প্রয়োগ করেন, তাহলে বিষ অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং কোনও ব্যথা হবে না। যাঁরা এর আগে বিছের কামড় খেয়েছেন, তাঁরা নিজে এই পরীক্ষাটি করে সুফল পেয়েছেন। যে ভক্তরা নাগ পঞ্চমীর দিনে এই বিশেষ পবিত্র স্থানে যান তাঁরা তাঁদের শরীরের ওপর বিছের আনাগোনা উপভোগ করেন।
নাগ পঞ্চমীতে পাহাড়ে ছুটে যান অগণিত ভক্ত। মানুষ যদি সেদিন পাহাড়ে যান এবং ঈশ্বরকে প্রণাম করে সেখানকার কোনো পাথর তুলে নেন তাহলে বিছে বেরিয়ে আসবে। তবে মজার বিষয় হল, এখানে অন্য কোনও দিন কোনও বিছে দেখা যায় না, স্থানীয় আইনজীবী বাসা রেড্ডি জানিয়েছেন।
মুম্বই, অন্ধ্রপ্রদেশের ভক্তরা এবং আশেপাশের গ্রামের লোকেরা কোন্ডমাই পাহাড়ে আরোহণ করতে আসেন এবং সেখানে বিশেষ বিছেগুলিকে দেখতে আসেন। তেলেঙ্গানার কিছু বেসরকারি সংবাদ চ্যানেল এই অদ্ভুত মন্দিরের ভিডিও সম্প্রচার করেছে।
এই পাহাড়টি আর্দ্র লাল এবং বেলে মাটি দিয়ে আবৃত। এখানে বিছে পোকাদের প্রজননের জন্য অনুকূল জলবায়ু রয়েছে। নাগা পঞ্চমীর সময় এই বৃশ্চিকরা প্রজননে নিযুক্ত থাকে কারণ বৃষ্টির কারণে তখন আবহাওয়া শীতল হয়ে যায়।
পঞ্চমীর পরের দিন পাহাড়ে নানা ধরনের বিছে দেখা যায়। এটা হয় মূলত তাদের প্রজননের কারণে। কোনও অলৌকিক কারণে নয় এবং এখানকার অনেক বিছে বিষাক্তও নয়, বলছেন কীটতত্ত্বের অধ্যাপক ড: ভেঙ্কটেশ।
কয়েক বছর আগে গুলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল এই জায়গা পরিদর্শন করেছিল। তবে বলা হয়ে থাকে যে, তারা এখানে এসে বিছেদের কামড় খেয়েছে।
আরও পড়ুন-
হুলুস্থুল কান্ড ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে, ঢুকে পড়ল সাপ একটি বড় সাপ!
জলপাইগুড়িতে উদ্ধার হল লাল কোরাল কুকড়ি সাপ, বাড়ির ভেতরে সাপ দেখে আতঙ্কে বাসিন্দারা
অজান্তেই বিষ ঢালছে কালাচ, সাপের কামড়ে সচেতনতা ও সতর্কতাই একমাত্র রক্ষাকবচ