খুব বেশি আনন্দ পেলে, অনেক সময় হাসতে হাসতে চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে। এই খুশির কান্নার পিছনে বিজ্ঞানটা কী (Science behind the tears of Joy), কেন এবং কীভাবে এমনটা হয়?
খুব বেশি আনন্দ পেলে, অনেক সময় হাসতে হাসতে আমাদের চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে। এই অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই সবারই রয়েছে। অনেকে একে খুশির কান্নাও (Tears of Joy) বলে থাকেন। তবে, এই কান্নার পিছনে কাজ করে জটিল বিজ্ঞান, এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। চলুন জেনে নেওয়া যাক, হাসতে হাসতে কান্নার পেছনের বিজ্ঞানটা কী (Science behind the tears of laughter), কেন এবং কীভাবে এমনটা হয় -
কান্না বের হওয়ার পিছনে রয়েছে দুটি কারণ
বিবিসির এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসতে হাসতে কান্নার দুটি কারণ হয়। প্রথম কারণটি হল, আমরা যখন প্রাণ খুলে হাসি, তখন আমাদের মুখের কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করতে শুরু করে। আর এই অবস্থা তৈরি হলে, আমাদের অশ্রু গ্রন্থি বা ল্যাক্রিমাল গ্রন্থির (Lacrimal Glands) উপর থেকেও মস্তিষ্কের (Brain) নিয়ন্ত্রণ চলে যায় এবং চোখের জল বেরিয়ে আসে।
আবেগপ্রবণ হলে চোখে চলে আসে জল
এবার আসা যাক দ্বিতীয় কারণে। মনে করা হয়, খুব বেশি হাসলে একজন ব্যক্তি অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। আর, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হলে মুখের কোষগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এর ফলে, চোখ থেকে জল বেরিয়ে আসে। এইভাবে কান্নার মাধ্যমে, আমাদের শরীর আমাদের কোষের চাপের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে।
মহিলারা বেশি আবেগপ্রবণ
আবেগের বিষয়টি ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়। কেউ কাঁদেন কম, আবার কেউ অল্পেই কেঁদে ভাসিয়ে দেন। এছাড়াও, মহিলা বা পুরুষ বিশেষেও আবেগের কম-বেশি হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে থাকেন। তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। তবে সাধারণত, মহিলাদেরই হাসতে হাসতে চোখে জল চলে আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে হরমোনের
বাল্টিমোরের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Maryland in Baltimore) মনোবিজ্ঞানী রবার্ট প্রোভিন (Robert Provine) জানিয়েছেন, আবেগ কম-বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে হরমোন। রবার্ট প্রোভিনের মতে, মানব মস্তিষ্কের যে অংশটি হাসির সময় সক্রিয়, কান্নার সময়ও সেই অংশটিই সক্রিয় হয়। ক্রমাগত হাসতে থাকলে বা কাঁদতে থাকলে, মস্তিষ্কের কোষের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এমন অবস্থায় শরীরে কর্টিসল (Cortisol) এবং অ্যাড্রেনালিন (Adrenaline) নামে দুটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলি হাসি বা কান্নার সময় শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়ার তৈরি করে। তাই অনেকে হাসতে হাসতে কেঁদে ফেলেন, আবার উল্টোটাও ঘটে থাকে।
প্রসঙ্গত, ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সুখের কান্নার সময় প্রথম অশ্রুজল বের হয় ডান চোখ থেকে এবং দুঃখের অশ্রুর সময় প্রথম চোখের জল বের হয় বাম চোখ থেকে।