পাবজিতে হেরে যাওয়া আর বন্ধুদের ঠাট্টায় সে রীতিমত অপমানিত বোধ করতে থাকে শান্তিরাজ। এই অপমানিত হওয়ার বদলা নিতেই জীবনের সবচেয়ে কঠিন ও চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সে। আত্মহত্যা করে।
প্রাণ কাড়ল মোবাইল। এই শিরোনামের ঘটনা প্রায়ই চোখে পড়ে। অন্ধ্রপ্রদেশে ঘটল প্রায় এরকমই একটি ঘটনা। অনাইন গেমসে হেরে ক্ষোভে দুঃখে আত্মহত্যা করে নিজের জীবন শেষ করে দিল এক কিশোর। অনলাইন গেম পাবজির প্রতিযোগিতা চলছিল বন্ধুদের মধ্যে। কে জেতে, কে হারে-চলছিল জোর টক্কর। সে যেন জীবন মরণ সমস্যা। খেলায় যে হারজিত থাকেই, তা কে বোঝাবে। হারের বোঝা নিতে পারে না অনেকেই। এই কিশোরও পারেনি। তারওপর ছিল বন্ধুদের টিটকিরি, গঞ্জনা।
পাবজি খেলায় মেতে বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরেছিল ১৬ বছরের কিশোর। সে বাজি যে জীবনের বাজি ছিল, তা কেউই বুঝতে পারেনি। পাবজি খেলায় বন্ধুদের কাছে হেরে ভেঙে পড়ে অন্ধ্র প্রদেশের কৃষ্ণা জেলার মাছলিপত্তনম শহরের বাসিন্দা ওই কিশোর। বন্ধুদের কাছে নিজেকে ঠাট্টার পাত্র হয়ে যেতে দেখতে পারেনি সে। বাড়ি ফিরে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল মৃত্যুর হাতে। নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই কিশোর।
শান্তিরাজ নামের ওই কিশোর স্থানীয় কংগ্রেস নেতার ছেলে। পাবজি খেলায় রীতিমত আসক্ত ছিল সে। রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে পাবজি গেমে অংশ নেয় শান্তিরাজ, এই খেলায় হেরে যায় সে। স্বাভাবিকভাবেই বন্ধুদের মধ্যে ঠাট্টা তামাশা শুরু হয়। কিন্তু তা মেনে নিতে পারেনি শান্তিরাজ। ভেঙে পড়ে। হেরে যাওয়া আর বন্ধুদের ঠাট্টায় সে রীতিমত অপমানিত বোধ করতে থাকে। এই অপমানিত হওয়ার বদলা নিতেই জীবনের সবচেয়ে কঠিন ও চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে শান্তিরাজ। আত্মহত্যা করে। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঠিক কোন কারণে শান্তিরাজ এরকম পদক্ষেপ নিল, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তান্তিয়া কুমারী, মৃত কিশোরের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। তিনি দাবি করেন যে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত PUBG-এর মতো গেমগুলিকে নিষিদ্ধ করা উচিত কারণ এই খেলা জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ২০১৯ সালে দেশে PUBG নিষিদ্ধ করা হয়েছিল কিন্তু এটি সম্প্রতি একটি অন্য নামে আবার খেলা হচ্ছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কী করে এই কিশোররা সেই নিষিদ্ধ গেম খেলছে। কী করে সাইবার সিকিউরিটির চোখ এড়িয়ে এটা সম্ভব হল, প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন, হাওড়া যাওয়ার পথে গ্রেফতার সুকান্ত, পুলিশ অগণতান্ত্রিক, অভিযোগ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির
আরও পড়ুন, 'পাপ করল বিজেপি, কষ্ট করবে জনগণ ? বরদাস্ত করব না ', হাওড়া ইস্যুতে বিস্ফোরক মমতা
উল্লেখ্য, ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও পাবজি খেলা হচ্ছে বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। ভারত থেকে এই গেমের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করত চিন ও কোরিয়া। ভারতে এই জনপ্রিয় গেম বন্ধ করার পর একটা অংশের গেমারদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে যায়। অনেকেই এই গেম ফেরানোর দাবিও জানায়। গেমটি কোরিয়ান হলেও ভারতে এর ডিস্ট্রিবিউশন সংক্রান্ত দায়িত্বভার এক চিনা কোম্পানির হাতে থাকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল পাবজি মোবাইল। তবে শেষরক্ষা যে করা যায়নি তা এই ঘটনাই প্রমাণ।