রাহুল গাঁধী সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো এবার গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে কারও হাতে কংগ্রেসের ব্যাটন তুলে দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই সনিয়া গান্ধীকেই অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে বেছে নিয়েছে কংগ্রেসে ওয়ার্কিং কমিটি। আর এবার কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী স্বীকারই করে নিলেন, গান্ধী পরিবারের বাইরে অন্য কারও পক্ষে কংগ্রেসের দায়িত্ব সামলানো মুশকিল।
সংবাদসংস্থাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অধীর বলেছেন, গান্ধী বা নেহরু পরিবারের যে 'বাজার মূল্য' রয়েছে, তা অন্য কোনও নেতার নেই।
কিন্তু গান্ধী পরিবারের কারও নেতৃত্বে কি কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? অধীরের দাবি, কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানো অনেকটাই নির্ভর করছে আঞ্চলিক দলগুলির শক্তিক্ষয়ের উপরে। বহরমপুরের সাংসদ মনে করেন, ভবিষ্যতে দেশের রাজনীতি আবর্তিত হবে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে ঘিরেই। কারণ মতাদর্শের অভাবের কারণেই ধীরে ধীরে জনসমর্থন হারাবে আঞ্চলিক দলগুলি। ছোট দলগুলি যত অস্তিত্ব সংকটে ভুগবে ততই কংগ্রেসের গুরুত্ব বাড়বে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন অধীর।
আরও পড়ুন- কাশ্মীর নিয়ে লোকসভায় বেফাঁস অধীর, বক্তব্য শুনে রেগে গেলেন সোনিয়াও
অধীর মনে করেন মতাদর্শগতভাবে শক্তিশালী এবং গোটা দেশব্যাপী উপস্থিতির কারণেই বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মোকাবিলা করতে পারবে কংগ্রেস।
অধীর বলেছেন,'যেভাবে আঞ্চলিক দলগুলি চলছে, তাতে ভবিষ্যতে তাদের গুরুত্ব আরও কমবে। আর যত তাদের গুরুত্ব কমবে, ততই কংগ্রেস আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে সরাসরি মোকাবিলা হলে আমাদের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা আরও বাড়বে।'
অধীর অবশ্য দাবি করেছেন, এবারেও সনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু দলের সংকটের সময়ে নেতাদের অনুরোধেই সেই দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। গান্ধী পরিবারের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে এবং সওয়াল করে অধীর বলেছেন, 'গান্ধী পরিবারের বাইরে কারও পক্ষে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া সত্যিই কঠিন। রাজনীতিতেও বাজার মূল্য থাকে। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে বাদ দিয়ে কি বিজেপি-ও কি মসৃণভাবে কাজ করতে পারবে? একইভাবে কংগ্রেসেও গান্ধী পরিবারই আমাদের বাজার মূ্ল্যের কাজ করে। এতে কোনও ক্ষতি নেই। অন্য কোনও নেতার সেই ক্যারিশমা নেই। এটাই কঠিন বাস্তব।'